Eastern Zonal Council Meeting

পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে নবান্নে মুখোমুখি শাহ ও মমতা, রয়েছেন হেমন্ত, তেজস্বীরাও

শনিবার নবান্নের বৈঠকে শাহ ও মমতার পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন রয়েছেন। রয়েছেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:১৮
নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদ বৈঠকে মমতা ও শাহ।

নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদ বৈঠকে মমতা ও শাহ। ছবি: সংগৃহীত।

পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদ (ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিল)-এর বৈঠকে আগেও মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। তবে রাজনৈতিক সংঘাতের প্রেক্ষপটে। ভিন্‌রাজ্যে। এ বার পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত মঞ্চের বৈঠকে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফলে বিষয়টি ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।

শনিবার নবান্নের বৈঠকে শাহ ও মমতার পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন রয়েছেন। রয়েছেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়কের মন্ত্রিসভার প্রতিনিধি। শাহের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাও এসেছেন বৈঠকে যোগ দিতে। পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়, নিরাপত্তা, সমস্যা সমাধানের কৌশল ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে গত ৫ নভেম্বর নবান্ন সভাঘরে পূর্বাঞ্চল পরিষদের ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠকে পৌরোহিত্য করার কথা ছিল শাহের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সারা দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশের অভিন্ন উর্দি চালুর কথা বলেছিলেন। নবান্ন সূত্রের খবর, বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি বিএসএফের কাজের পরিধি বাড়ানো নিয়ে সীমান্তবর্তী রাজ্য বাংলার আপত্তির কথা উঠতে পারে বৈঠকে।

২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে প্রবল বিক্ষোভের মধ্যে ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিলেন মমতা-শাহ। সেখানে সিএএ-এর পাশাপাশি জাতীয় পঞ্জীকরণ (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার বা এনপিআর) নিয়ে আপত্তির কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং সিকিম। ২০১৮ সালে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির ২৩তম বৈঠক হয়েছিল নবান্ন সভাঘরে। তখন বৈঠকের পৌরোহিত্য করেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

সাধারণত পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয় মিটিয়ে নেওয়া এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনার জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই পরিষদের বৈঠক হয়ে থাকে। কিন্তু নবান্নে মমতা ও শাহের উপস্থিতির জন্য বৈঠক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সাম্প্রতিক কালের ‘তৎপরতার’ নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কোনও ভূমিকা আছে বলে মমতা বিশ্বাস করেন না। প্রকাশ্যে সে কথা জানিয়েছেনও তিনি। কিন্তু সেই সঙ্গেই ঠারেঠোরে সিবিআই-ইডির ‘তৎপরতার’ জন্য অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শাহের দিকে।

যদিও সরকারি খাতার প্রথম তদন্তকারী সংস্থা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীন। দ্বিতীয় সংস্থাটির পরিচালনা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের হাতে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ইডির জেরার পর বলেছিলেন, ‘‘অমিত শাহ ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় পাপ্পু।’

গত বছর মে মাসে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের পরে শাহের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিল মমতার। সেখানেও বাংলাকে কেন্দ্রীয় সাহায্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বঞ্চনায় অভিযোগ তুলেছিলেন বলে সরকারের একটি সূত্রের খবর। কয়েক মাস আগে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে কর্মসূচিতে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে শাহ ও অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। ওই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement