কোচবিহারে তৃণমূলের একটি অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চ। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে রবিবার রাজ্য জুড়ে ব্লক স্তরে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ব্লকে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল। চেতলায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম থেকে বরাহনগরে বিধায়ক তাপস রায়— জায়গায় জায়গায় দুপুর থেকে অবস্থান বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। আবাস এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে মোদী সরকারকে নিশানা করেছে তৃণমূল। রাজ্যের ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পাশাপাশি উঠে এসেছে মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের প্রসঙ্গও।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে হকের টাকা ছিনিয়ে আনতে হবে আমাদের।’’ মন্ত্রী শশী পাঁজা আবার রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকেও নিশানা করেছেন। রাজ্য বিজেপি নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘ওরা হয় আদালতে যায়, না হলে রাজ্যপালের কাছে যায়। বাংলার মানুষের জন্য কিছু করে না।’’ অন্য দিকে, রাজ্যের শাসকদলের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বিজেপির দাবি, বাংলাকে কোনও ‘বঞ্চনা’ করেনি কেন্দ্র। বরং কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পকে নাম বদলে দিয়ে নিজেদের প্রচার করেছে তৃণমূল। মমতা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন বিরোধী নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘আজ চোরেরা ধর্নায় বসেছেন।’’ নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের সংযোজন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজধর্ম পালন করেন। তিনি কাউকে বঞ্চনা করেন না।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তের খোঁচা, ‘‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে ব্লকে বিক্ষোভ করে কী হবে? বঞ্চনা হয়েছে, মনে করলে সোজা দিল্লি চলে যান।’’
বস্তুত, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, রাজ্যের প্রাপ্য টাকা ছিনিয়ে আনবেন দিল্লি থেকে। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক বাবা-বাছা করেছি। অনেক সৌজন্যের রাজনীতি দেখিয়েছি। আর নয়।’’ ২ অক্টোবর ১০ লক্ষ লোক নিয়ে তিনি দিল্লি যাওয়ার কথা বলেন। এর পর বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি নেয় তৃণমূল। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। অভিষেক নিজেও চিকিৎসা করাতে এই মুহূর্তে দেশের বাইরে। তাঁর অনুপস্থিতিতেই রাজ্য জুড়ে ‘পরিবর্তিত’ অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করছে তৃণমূল।
ব্লকে ব্লকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেতারা। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধুমাত্র রাজ্যের বকেয়া নিয়ে থেমে থাকেনি। বিজেপি-শাসিত মণিপুরে যে ভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে এবং কেন্দ্র যে ভাবে বিষয়টি দেখছে, তা নিয়েও সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।