R G Kar Hospital Incident

শুভেন্দুর জেলায় আঁচ নেই: তৃণমূলের সমীক্ষা

তৃণমূলের ভোট পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্প্রতি জেলায় জেলায় ঘুরে সমীক্ষা শুরু করেন। সূত্রের খবর, দলের জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাগুলির বিভিন্ন মানুষের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলছেন।

Advertisement
কিংশুক গুপ্ত , কেশব মান্না
ঝাড়গ্রাম ও কাঁথি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৬
আরজি কর-কাণ্ডে বিক্ষোভ।

আরজি কর-কাণ্ডে বিক্ষোভ। —ফাইল ছবি।

আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা। এই আন্দোলনের আঁচ কতটা লেগেছে গ্রামগঞ্জে— তা বুঝতে এর মধ্যেই মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের ভোট সমীক্ষকেরা। দলের তরফে জানা গিয়েছে, কয়েকটি জেলায় সমীক্ষাও করেছে তারা। সেই তালিকায় রয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও সংলগ্ন ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলমহল। সমীক্ষকদের দাবি, কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকা আর জি কর আন্দোলনে যতটা উত্তাল, এই দুই জেলার গ্রামাঞ্চলে তার আঁচ সে ভাবে লাগেনি। পাশাপাশি, শহরের মানুষের ক্ষোভ প্রশমনের দাওয়াইও খুঁজছে সংস্থাটি। বিরোধীদের পাল্টা দাবি, দলের নিচুতলায় ধস সামলাতে ঘরে বসে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করানো হচ্ছে।

Advertisement

তৃণমূলের ভোট পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা সম্প্রতি জেলায় জেলায় ঘুরে সমীক্ষা শুরু করেন। সূত্রের খবর, দলের জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাগুলির বিভিন্ন মানুষের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলছেন। দু’বছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে, তৃণমূলের জনসমর্থন টাল খাচ্ছে কি না, সেটা দেখতেই এই সমীক্ষা, খবর তৃণমূল সূত্রে।

সংস্থাটির দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ হলেও কাঁথি থেকে নন্দীগ্রাম, দিঘা থেকে কোলাঘাট— আর জি করের আঁচ সে ভাবে পড়েনি। এই জেলায় তৃণমূলের ভোট সমীক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণ, আর জি কর আন্দোলন পুরোদস্তুর শাসক-বিরোধী আন্দোলন হয়ে উঠতে পারেনি। এমনকি, এই আন্দোলনকে হাতিয়ার করে দাগ কাটতে পারেনি বিজেপিও। যেটুকু যা আন্দোলন, কাঁথিতেই হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর ফের কাঁথিতে বড় জমায়েতের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু।

কাঁথির পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি বলছেন, ‘‘অরাজনৈতিক আন্দোলনকে মানুষ স্বাগত জানাচ্ছে। তবে বিজেপি এবং সিপিএম যখন রাস্তায় নামছে, মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না।’’ বিজেপির তমলুক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পালের অবশ্য দাবি, ‘‘আর জি কর কাণ্ডে তৃণমূল পুরোপুরি ব্যাকফুটে।’’

ঝাড়গ্রামে আবার একমাত্র লোকসভা আসনটি জিতেছে তৃণমূল। কিন্তু ঝাড়গ্রাম পুরসভায় তারা ১৮টির মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে। আর জি কর নিয়ে অরণ্যশহরে লাগাতার নাগরিক প্রতিবাদও হচ্ছে। তবে তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থার পর্যবেক্ষণ, এই প্রতিবাদ গ্রামাঞ্চলে ছড়ায়নি। ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া, বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি, জামবনি ব্লকের দুবড়ার মতো গ্রামীণ এলাকায় অরাজনৈতিক মিছিলও মূলত বিরোধী দলের উদ্যোগেই হয়েছে। তাতে লোক ছিল হাতেগোনা। উল্টে চলতি মাসে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকতে দেরি হওয়ায় উদ্বেগে ছিলেন মহিলারা। বেলপাহাড়ির প্রৌঢ়া সরলা সরেন বলেন, ‘‘শুনছি আন্দোলনের জন্য টাকা পেতে দেরি হচ্ছে। টাকাটা পেলে সত্যি সংসারে সুরাহা হয়।’’

ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর মতে, ‘‘আর জি করের ঘটনায় আমরা সকলেই ব্যথিত। তবে যে ভাবে সরকারকে হেয় করার চক্রান্ত হচ্ছে, তাতে গ্রামের মানুষের সমর্থন নেই।’’

সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পুলিনবিহারী বাস্কের অবশ্য দাবি, ‘‘সরকারি প্রকল্প পান বলেই গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ আন্দোলনে নেই— এই তথ্য ঠিক নয়।’’ বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর কটাক্ষ, ‘‘হাস্যকর ভুয়ো তথ্য দিয়ে আর জনরোষ চাপা দেওয়া সম্ভব নয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement