তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের ঘটনার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করল যুব তৃণমূল। কলকাতায় সেই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৭, ২৮ এবং ৩০ জুলাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মণিপুরের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী ২৭ এবং ২৮ জুলাই রাজ্যের প্রতি জেলায় ব্লক ধরে ধরে জেলা যুব তৃণমূলের তরফে পথে নামবেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া, ৩০ জুলাই কলকাতায় একটি প্রতিবাদ মিছিল বেরোবে। তার নেতৃত্বে থাকবেন সায়নী। ওই দিন যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মোমবাতি হাতে পথে নামবেন। মিছিলের পর হবে প্রতিবাদ সভাও।
যুব তৃণমূল জানিয়েছে, বিজেপি শাসিত মণিপুরে তিন মাস ধরে যে অশান্তি চলছে তার প্রতিবাদে মিছিল হবে। উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যটিতে মহিলাদের উপর নিয়মিত অত্যাচার, বিজেপি সরকারের ব্যর্থতা এবং এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নীরবতাকেও কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল।
বুধবারেও মণিপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে দক্ষিণ কলকাতায় মিছিল হয়েছে। মহিলা তৃণমূলের তরফে সেই মিছিল হয় গড়িয়াহাট থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত। তার পর সেখানেই অবস্থানে বসেছিলেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। নেতৃত্বে ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মিছিলে হেঁটেছেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, মহিলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদিকা প্রিয়দর্শিনী হাকিম প্রমুখ।
মণিপুরে গত মে মাস থেকে অশান্তি চলছে। জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। ধারাবাহিক হিংসায় এখনও পর্যন্ত দেড়শোর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। ঘরছাড়া রয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি মণিপুরের দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রীও মৌখিক ভাবে ঘটনার নিন্দা করেছেন। বিরোধীরা ওই ভিডিয়োকাণ্ডের পর মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
মণিপুরের ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলগুলি একযোগে যখন বিজেপি সরকারের নিন্দায় সরব হয়েছেন, তখন পশ্চিমবঙ্গে তার পাল্টা হিসাবে বিজেপি তুলে ধরেছে মালদহ ইস্যু। মালদহের বামনগোলাতেও দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা তুলে ধরে বাংলার সরকারকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। মালদহকাণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার শহরে প্রতিবাদে নেমেছে বিজেপি। শ্যামবাজারে বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি ফাল্গুনী পাত্রের নেতৃত্বে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে, যার স্লোগান ‘আমিও বাংলার মেয়ে, আমিও বাঁচতে চাই’।