BJP-TMC

মমতাকে ‘কুকথা’! বিজেপি বিধায়কের হাত-পা ভাঙার হুমকি তৃণমূল নেতার, কেউ কেউ ওঠবোসও করাতে চান

গত মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনায় বাঁকুড়ার ওন্দায় প্রতিবাদ মিছিল ও সভা করে বিজেপি। সেখানে বক্তৃতা করতে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ২০:১৫

—প্রতীকী চিত্র।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কুমন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেলাগাম হলেন শাসকদলের নেতারাও। একে একে মঞ্চে উঠে বক্তৃতা করতে গিয়ে কেউ ওই বিজেপি নেতার হাত-পা ভাঙার হুঁশিয়ারি দিলেন, কেউ আবার নিদান দিলেন কান ধরে ওঠবোস করানোর। ‘কুকথা’র প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় তৃণমূল নেতাদের এমন সব মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনায় বাঁকুড়ার ওন্দায় প্রতিবাদ মিছিল ও সভা করে বিজেপি। সেখানে বক্তৃতা করতে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। তার প্রেক্ষিতে বিধায়কের বিরুদ্ধে পৃথক ভাবে দু’টি অভিযোগও দায়ের হয়। একটি হয় ওন্দা থানায়, অন্যটি কোতুলপুর থানায়। এর পর শুক্রবার অমরনাথের গ্রেফতারির দাবিতে ওন্দায় সভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দলের ব্লক সভাপতিদের একাংশ ও স্থানীয় অঞ্চল সভাপতিরা। সভায় বক্তৃতা করতে উটে উঠে প্রথমেই তৃণমূলের পুনিশোল অঞ্চল সভাপতি ওমর ফারুক লেখার অযোগ্য ভাষায় বিধায়ক অমরনাথকে আক্রমণ করেন। ইন্দাসের ব্লক সভাপতি শেখ হামিদও অমরনাথকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অপমান আমরা মেনে নেব না। অমরনাথ শাখা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চাইলে তাঁকে যেখানে দেখতে পাব, আমরা আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হব। ক্ষমা না চাইলে ইন্দাস ব্লকের যেখানে উনি পা দেবেন, সেখানেই মারব এবং তাঁকে কান ধরে উঠবোস করাব।’’

তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁকে রাস্তায় দেখা গেলেই হাত-পা ভেঙে ফেলে রাখা হবে। আর সেটাই হবে ওঁর যোগ্য জবাব।’’ যুব তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘গর্ভে ধারণ করে এক মা আমাকে জন্ম দিয়েছেন। আর এক মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে রাজনৈতিক ভাবে জন্ম দিয়েছেন। সেই মায়ের অপমান আমরা মানব না। অমরনাথ শাখা একবার আমাদের কর্মীদের লাঠি ও রড দিয়ে পেটানোর নিদান দিয়েছিলেন। এ বার মা-বোনেরা একই ভাষায় আপনাকে জবাব দেবে।’’

দলীয় নেতাদের এই ধরনের মন্তব্যে জেলায় শোরগোল পড়তেই অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ধরনের কথা বলা কোনও রাজনৈতিক দলেরই উচিত নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু তৃণমূল কর্মীদের কাছে নয়, সারা বাংলার মানুষের কাছে একটা আবেগের নাম। অমরনাথ শাখা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ সকলে। আবেগতাড়িত হয়ে তাই অনেকে অনেক কথা বলে ফেলছেন। আমরা অমরনাথ শাখার গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছি।’’

অমরনাথ পাল্টা বলেন, ‘‘এই ধরনের কুকথা বলা তৃণমূল নেতাদের সংস্কৃতি। সে দলের মাথা যে ভাষায় কথা বলেন, সেই দলের নেতা-কর্মীরাও একই ভাষায় কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। মুখে বড় বড় কথা বলে লাভ নেই। ক্ষমতা থাকলে তৃণমূল নেতারা সামনে এসে করে দেখান।’’

আরও পড়ুন
Advertisement