নতুন রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে চান মমতা। ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথম থেকেই নীল-সাদাকে বাংলার সরকারি রং হিসেবে তুলে ধরেছেন। সেই নীল-সাদা রং দিয়েই নতুন রাজ্যপালকে স্বাগত জানাতে চলেছে ‘নীল-সাদা’ নবান্ন।
বুধবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ শপথ নেবেন নতুন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে স্বাগত জানাতে অন্য অনেক কিছুর সঙ্গে একশোটি রসগোল্লা নিয়ে যেতে চান মমতা। মিষ্টি বানানোর বরাত দেওয়া হয়েছে কলকাতায় রসগোল্লার আবিষ্কারক নবীনচন্দ্র দাসের এক বংশধরের সংস্থাকে। শুধু তাই নয় সেই রসগোল্লা নীল হাঁড়িতে করে নবান্ন থেকে যাবে রাজভবনে। দু’টি হাঁড়িতে পঞ্চাশটি করে মোট একশোটি রসগোল্লা থাকবে।
প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে এই রাজ্যের রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন মিজোরামের রাজ্যপাল লা গণেশন। ধনখড়ের গোটা কার্যকালেই বার বার শাসকদল তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছিল। কখনও কখনও তিক্ততাও। তবে, অনেক সময়েই মমতার সঙ্গে ধনখড়কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই দেখা যেত। রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের দূরত্ব তৈরি হলেও মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যপাল কখনও মুখোমুখি সংঘাতে যাননি। এ বার নতুন রাজ্যপালের সঙ্গে প্রথম দিন থেকেই ধনখড় জমানার তিক্ততা ভুলে ‘মিষ্টি সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে চাইছে নবান্ন। এমনটাই বলছেন সরকারি কর্তারা।
সম্প্রতি চেন্নাই সফরে গিয়ে মমতা গণেশনের বাড়িতেও গিয়েছিলেন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় হাজির হতে দেখা গিয়েছিল অস্থায়ী রাজ্যপালকে। এ বার স্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে আনন্দের মেয়াদ শুরুর দিন থেকেই সম্পর্ক মধুর করতে চাইছে নবান্ন। সেই উদ্যোগেই বাগবাজারের রসগোল্লা যাবে রাজভবনে।
ওই মিষ্টি সংস্থার কর্ণধার ধীমান দাশ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতেই নবান্নের পক্ষ থেকে ‘স্পেশাল’ রসগোল্লা তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। তৈরি রাখতে বলা হয়েছে নীল হাঁড়িও। বুধবার সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে দু’টি নীল হাঁড়িতে ২৬ টাকা দামের একশোটি রসগোল্লা সাজিয়ে ফেলতে হবে। ধীমান বলেন, “বরাত পাওয়ার পরেই আমরা জানতে চেয়েছিলাম নবান্নে পৌঁছে দিতে হবে কি না। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, তার দরকার নেই। সাড়ে ১০টার মধ্যে নবান্নের তরফ থেকে কেউ গিয়ে দাম দিয়ে রসগোল্লা নিয়ে আসবে। আমাদের ঐতিহ্য বজায় তো রাখবই, সেই সঙ্গে ঠিক যেমনটা বলা হয়েছে তেমন ভাবেই সাজানো হবে।”
বাংলার রসগোল্লা ভুবনখ্যাত। ওড়িশার সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে নিজস্বতার স্বীকৃতিও পেয়েছে বাংলা। কেরলের ভূমিপুত্র আনন্দ নিশ্চয়ই জানেন সে কথা। তাছাড়া কর্মজীবনের শুরুতে তিনি তো এই শহরে বেশ কিছু দিন কাটিয়েছেন। কলকাতায় থাকার সময় এই দোকানের রসগোল্লা তিনি কয়েক টন খেয়েছেন বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন আনন্দ। সব ঠিক থাকলে বুধবার শপথ গ্রহণের পরেই বাংলার দিদির হাত থেকে ‘প্রিয়’ মিষ্টি উপহার পাওয়ার আনন্দ পাবেন কেরলের আনন্দ।