সোমবার দিল্লি যাবেন মমতা। ফাইল চিত্র।
৪ ডিসেম্বর, ২০০৬। সিঙ্গুর আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন তখন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তারও ১১ বছর হয়ে গেল। কিন্তু তিনি যে সিঙ্গুর আন্দলোনের কথা ভোলেননি তা মনে করালেন তৃণমূলনেত্রী। রবিবার, ডিসেম্বরের ৪ তারিখে ১৬ বছর পূর্ণ হল সেই আন্দোলনের। সে বার ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলেছিল অনশন। বাংলা তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিও আলোড়িত হয়েছিল সেই টানা অনশনে। চাপে পড়ে গিয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার। রবিবার সেই আন্দোলনের কথা মনে করানোর পাশাপাশি কৃষক ও অবহেলিতদের জন্য তাঁর কষ্টের কথা, কর্তব্যের কথাও জানিয়েছেন মমতা।
সোমবার দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এ বার মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়, তৃণমূলের প্রধান হিসাবে। নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। সেই সফরের ঠিক আগের দিন রবিবার টুইট করে ফেলে আসা আন্দোলনের কথা স্মরণ করালেন মুখ্যমন্ত্রী। জানালেন সে দিন তাঁর অনশন শুধু সিঙ্গুর নয়, গোটা দেশের কৃষকদের স্বার্থের জন্য ছিল। একই সঙ্গে লিখেছেন, ‘‘শক্তিমানের কাছে অসহায় মানুষের জন্য লড়াই আমার নৈতিক কর্তব্য। সেই লড়াই আমার জীবনী শক্তি। আমি কখনওই জনগণের প্রাপ্য অধিকারকে প্রশ্নের মুখে যেতে দেব না।’’
16 yrs ago today, I began my hunger strike for the farmers of Singur & rest of the nation.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 4, 2022
It was my moral duty to fight for those who were left helpless due to the greed of the powerful.
That fight in me lives on. I’ll never let the rights of my people be threatened!
তিনি যে লড়াকু তা জানে বাংলা তথা দেশের রাজনীতি। সেই কথাই নতুন করে মনে করালেন মমতা। তৃণমূল নেতারা বলছেন, প্রতি বছরই এই দিনে অনশন আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে অনেকে মনে করছেন, প্রতি বছরের টুইটের সঙ্গে এ বার একটা ফারাক রয়েছে। কারণ, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। একশো দিনের কাজ বাবদ টাকা থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ ঠিক মতো না পাওয়ায় তিনি ফের লড়াইয়ের মেজাজে। এই পরিস্থিতিতেও মমতার ১৬ বছর আগের কথা স্মরণকে আলাদা চোখে দেখতে চাইছেন অনেকে।
সেই সব দিনের কথা তিনি মাঝে মাঝেই স্মরণ করেন। গত জুন মাসেই সিঙ্গুরে গিয়েছিলেন মমতা। বাজেমেলিয়া গ্রামের একটি মন্দিরে পুজো দেন তিনি। সে দিনও তাঁর আন্দোলনের কথা মনে করিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘১৪ দিন এখানে ধর্না ও ২৬ দিন কলকাতায় অনশন। আমাকে ২৫ সেপ্টেম্বর বিডিও অফিস থেকে মারধর করে বার করা হয়। আমার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এমনকি, ডানকুনিতে রাত ১টায় আমার ওপর অকল্পনীয় অত্যাচার হয়েছিল। সিঙ্গুরের মানুষের অদম্য সাহস ছিল, তাঁরা আমার পাশে সব সময় ছিলেন।’’