TMC Foundation Day

২৬ বছরে জোড়া প্রতিপক্ষ পেয়েছে জোড়া ফুলের দল, জন্মদিনে কাকে কত নম্বর দিলেন তৃণমূলের নেতারা

২৬ বছরে বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বদলে গিয়েছে। সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করে সরকারে এসেছিল তৃণমূল। তার পর ক্রমে বিরোধী শক্তি হিসেবে সিপিএমকে সরিয়ে উঠে এসেছে বিজেপি।

Advertisement
শোভন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৬
MC Leaders rated CPM and BJP as its opponents in 26 years of journey dgtls

(বাঁ দিক থেকে) শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মালা রায়, কুণাল ঘোষ, অরূপ চক্রবর্তী, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬ বছর বাংলার মাটিতে রাজনীতি করছে তৃণমূল। জন্ম থেকেই সাড়া জাগানো বিরোধী দল থাকার পর, গত সাড়ে ১৩ বছর তারাই বাংলার শাসকদল। ২৬ বছরের ইতিহাসে বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ বদলে গিয়েছে। সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করে সরকারে এসেছিল তৃণমূল। তার পর ২০১৬ সাল পর্যন্ত মূলত বামেরাই ছিল তৃণমূলের প্রতিপক্ষ। কিন্তু ক্রমে সেই পরিসর নিয়ে নিয়েছে বিজেপি। বাংলায় এখন বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে কে বেশি প্রতাপশালী? সিপিএম না বিজেপি? তৃণমূলের বিভিন্ন প্রজন্মের পাঁচ নেতানেত্রীকে প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। নানা জন নানা মত দিলেন। কেউ নম্বর দিলেন দুই প্রতিপক্ষকে। কেউ দিলেন না।

Advertisement

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (রাজ্যের কৃষি ও পরিষদীয়মন্ত্রী)

প্রতিপক্ষ হিসেবে সিপিএম ও বিজেপিকে সমান ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন শোভনদেব। তাঁর বক্তব্য, সিপিএমের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন, সেই দলের দর্শন কেবল হিংসা, সন্ত্রাস আর খুন। অন্য দিকে বিজেপি যেমন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে, তেমনই তারা দেশের আইন বদলে দিচ্ছে। রাষ্ট্র কাঠামোকে ব্যবহার করে একদলীয় শাসন কায়েম করার পথে হাঁটতে চাইছে। শোভনদেবের মতে, তৃণমূলের কাছে দু’টি দলই সমান বিপজ্জনক। ১০-এর মধ্যে দু’টি দলকেই ৯ দিয়েছেন বর্ষীয়ান মন্ত্রী।

মালা রায় (সাংসদ, দক্ষিণ কলকাতা) শোভনের মতো মালাও সিপিএম ও বিজেপিকে এক সারিতেই রাখতে চেয়েছেন। তবে তিনি কোনও নম্বর দিতে চাননি। মালার যুক্তি অবশ্য ভিন্ন। তাঁর কথায়, ‘‘রাজনীতিতে শত্রু আমার কাছে শত্রুই। সেখানে কেউ কম, কেউ বেশি বলে আমি মনে করি না। সিপিএমের বিরুদ্ধে আমাদের যেমন লড়াই ছিল, বিজেপির বিরুদ্ধেও তা-ই। আলাদা কিছু নয়।’’

কুণাল ঘোষ (রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক)

তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য আবার ভিন্ন। তিনি মনে করেন, সিপিএমের যেমন সন্ত্রাস ছিল, গণতন্ত্র হত্যা করা ছিল, সে সব বিজেপির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। পাশাপাশি বিজেপির সঙ্গে যোগ হবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। কুণালের কথায়, ‘‘সিপিএমকে আমরা রাজ্যের প্রেক্ষিতে দেখেছি। বিজেপিকে দেখছি দেশের নিরিখে। দু’টি দলের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তবে দু’টি দলকেই তৃণমূল বার বার পরাস্ত করেছে।’’ নির্দিষ্ট ভাবে নম্বর না দিলেও কুণাল বলেছেন, তিনি মনে করেন, ‘বিপদের’ দিক থেকে সিপিএমের থেকে এক কদম এগিয়ে থাকবে বিজেপি।

অরূপ চক্রবর্তী (তৃণমূল মুখপাত্র)

তৃণমূলের এই তরুণ নেতা কুণালের মতোই সিপিএমের থেকে বিজেপিকে বেশি বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সিপিএম নামক জগদ্দল পাথরকে সরানো গিয়েছিল। তার পর ২০২১ সালে রাষ্ট্রশক্তি শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া বিজেপিকে রুখে দেওয়া গিয়েছিল। সেই সময়ে মমতার পাশে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ অরূপের বক্তব্য, সিপিএম পুলিশকে কাজে লাগিয়েছিল, সন্ত্রাস করেছিল ঠিকই, তবে বিজেপির মতো ধর্ম, জাত-পাত নিয়ে রাজনীতি করেনি। তাই সিপিএমকে ১০-এর মধ্যে ৭.৫ দিলেও অরূপ বিজেপিকে দিয়েছেন ৮.৫। নিরিখ ‘বিপদ’।

তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য (তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি)

সবার থেকে ভিন্ন পথে হেঁটে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপির তুলনায় সিপিএমকে এগিয়ে রেখেছেন তৃণাঙ্কুর। তাঁর বক্তব্য, সিপিএমের সন্ত্রাস, সায়েন্টিফিক রিগিংয়ের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছিল তৃণমূলকে। রাজনীতিতে যে কোনও লড়াই-ই শক্তিশালী। কিন্তু বিজেপি যে হেতু বাংলায় সে ভাবে প্রতিষ্ঠা পায়নি তাই তাঁদের ততটা গুরুত্ব দেওয়া যায় না বলে মনে করেন টিএমসিপির সভাপতি। তবে নম্বরে তা বাঁধতে চাননি তৃণাঙ্কুর।

Advertisement
আরও পড়ুন