লকেটকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট কুণালের গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভবানীপুর উপনির্বাচনে দলের হয়ে প্রচারে না-আসার জন্য বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে টুইট করে ধন্যবাদ জানালেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ভবানীপুর উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের হয়ে প্রচার করার জন্য ‘তারকা প্রচারক’-দের তালিকায় নাম ছিল হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেটের। কিন্তু তিনি ভবানীপুরে প্রচারে আসেননি। বস্তুত, সোমবারই উপনির্বাচনের প্রচারের শেষ দিন। সে দিন পর্যন্ত লকেটকে ভবানীপুরে দেখা যায়নি। তৃণমূল প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচার না করার জন্যই টুইটে লকেটকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কুণাল। সেই সূত্রেই লকেটকে নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা— তবে কি বাবুল সুপ্রিয়র পরে আরও এক বিজেপি সাংসদ দলবদল করতে চলেছেন?
তবে এই প্রসঙ্গে লকেট সোমবার কিছু বলেননি। তিনি আপাতত উত্তরাখন্ডের সহ-প্রভারী হিসাবে কাজ করছেন। প্রসঙ্গত, বিজেপি সূত্রের খবর, লকেটকে ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই মর্মে দলের বিভিন্ন স্তর থেকে তাঁকে একাধিক বার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু লকেট সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। ঘটনাচক্রে, বিজেপি-র অন্দরে লকেটের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘সমীকরণ’ খুব ভাল ছিল না। বরং দিলীপের আমলে তুলনায় বেশি গুরুত্ব পেয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। যিনি গত বিধানসভা ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। দিলীপের উদ্যোগেই অগ্নিমিত্রা বিজেপি-র মহিলা মোর্চার রাজ্য শাখার সভাপতি হয়েছিলেন বলে খবর। যদিও এর আনুষ্ঠানিক সত্যতা কোনও তরফেই কখনও স্বীকার করা হয়নি। তবে দিলীপ-লকেট সমীকরণ যে সবসময়েই ‘মধুর’ থেকেছে, তা বিজেপি-র অন্দরে কারও অজানা নয়।
Thanks and congrats 'star campaigner' @me_locket for not campaigning at Bhabanipur. Inspite of many requests from BJP U hvn't come.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) September 27, 2021
As a friend wish your success wherever u r.
World is too small.
Hope those days will return again when u started your political innings.
সোমবার সকালে টুইটে কুণাল লেখেন, ‘ভবানীপুরে প্রচারে না আসায় তারকা প্রচারক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। বিজেপি-র অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি প্রচার করেননি। আপনি যেখানেই থাকুন বন্ধু হিসাবে আপনার সাফল্য কামনা করি।’ এর পরেই জল্পনা বাড়িয়ে কুণাল লেখেন, ‘পৃথিবী খুব ছোট। আশা করছি আপনার রাজনীতি শুরু করার দিনগুলি আবার ফিরে আসুক।’ অর্থাৎ, লকেট তাঁর রাজনীতিক জীবন শুরু করেছিলেন তৃণমূল থেকে। তিনি যেন সেখানেই ফিরে আসেন। সেই সূত্রেই বাবুলের দলবদলের পর লকেটকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যে জল্পনা বলছে, লকেটের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে তৃণমূলের। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর ভাঙন ধরেছে বিজেপি-তে। একের পর এক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তার মধ্যে কিছু দিন আগে সাংসদ বাবুলও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন।
সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের পর (লকেট বিধানসভা ভোটে লড়ে হেরে যান। তাঁর লোকসভা কেন্দ্র হুগলির অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলের চেয়ে পিছিয়ে ছিল বিজেপি) থেকে লকেটের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বেড়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। তবে এই দূরত্ব বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক কোনও সত্যতা মেলেনি। লকেট ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, তিনি উত্তরাখন্ডের সহ-প্রভারীর দায়িত্ব পেয়ে খুশি। সম্প্রতি লকেটের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। যা থেকে জল্পনা আরও ছড়িয়েছে। কারণ, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে বাবুলও নড্ডার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছিলেন।