Abhishek Banerjee

রক্তপাতহীন ভোট করতে চাই ভাল প্রার্থী, ‘ভাল মানুষের’ খোঁজে কর্মসূচি শুরু করলেন অভিষেক

তৃণমূলের এই কর্মসূচি উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের দিনহাটা থেকে শুরু করে ৬০তম দিনে তা সাগরে এসে শেষ হবে। পঞ্চায়েতে দলের প্রার্থী খুঁজতে ২৫০টি জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ১৮:৩২
Abhishek Banerjee

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি শুরু হচ্ছে কোচবিহার থেকে। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটে গা জোয়ারি করা যাবে না। সাংগঠনিক শক্তির উপর ভিত্তি করে ভোটে লড়াই করতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আগেই সে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সন্ত্রাসহীন পঞ্চায়েত ভোট করাই যে তাঁদের চ্যালেঞ্জ, তা আরও এক বার বোঝাতে চাইলেন অভিষেক। সোমবার জনসংযোগ যাত্রার শুরুতে অভিষেক জানালেন তিনি ভাল মানুষের খোঁজে পথে নামছেন। সন্ত্রাসবিহীন ভোট করতে হলে চাই ‘ভাল প্রার্থী’।

সোমবার থেকে অভিষেকের ৬০ দিনের সংযোগ যাত্রা সূচি সাজিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে ওই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে কোচবিহার থেকে। কোচবিহার যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘এমন একটা কর্মসূচি ভারতবর্ষে কেউ কোনও দিন করেনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা বার বার বলি রক্তপাতহীন নির্বাচনের কথা। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব, যখন ভাল মানুষকে আমরা নির্বাচিত করতে সক্ষম হব।’’ তাঁদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য সেটাই বলে জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘যাতে ভাল মানুষ উঠে আসেন (রাজনীতির আঙিনায়), তার জন্য আমরা মানুষেরই কাছে যাচ্ছি। মানুষের নেতা কে হবেন, সেটা মানুষ ঠিক করবেন। কোনও বন্ধ ঘরে সেই আলোচনা হবে না।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, তৃণমূলের এই কর্মসূচি উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের দিনহাটা থেকে শুরু করে ৬০তম দিনে তা সাগরে এসে শেষ হবে। পঞ্চায়েতে দলের প্রার্থী খুঁজতে ২৫০ টি জনসভা করবেন অভিষেক। ৬০টি অধিবেশনও হবে। ৩০ লক্ষ মানুষের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ করার পাশাপাশি, ৩,৫০০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করবেন তৃণমূল নেতা। কর্মসূচি সফল করতে রবিবার রাজ্য এবং জেলাস্তরে নির্বাচনী কমিটি গঠন করেছে তৃণমূল। রাজ্যস্তরের এবং জেলাস্তরের কমিটির কাজ কী হবে সে বিষয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূলের ২২ জন শীর্ষ নেতা। জেলাভিত্তিক ৮টি জ়োন তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেক জ়োনের একটি করে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে ৬ থেকে ১০ জন তৃণমূল নেতাকে। এই কমিটিগুলির কাজ হবে গোটা প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা। এ নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘ভারতবর্ষে এই প্রথম বার মানুষকে প্রার্থী বেছে নেওয়ারও অধিকার দিচ্ছি আমরা। আমরা বলছি, শুধু নিজের ভোট নিজে দেওয়া নয়, নিজের প্রার্থীও নিজে বাছুন। এই কর্মসূচির যে অভিনবত্ব রয়েছে, তা আগামিদিনে ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে।’’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের স‌ংযোজন, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত, প্রগতিশীল পঞ্চায়েত তৈরি হবে বাংলায়। তার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। কারণ, কোনও কাজ একা করা সম্ভব নয়। যদি ১০ হাজার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই কাজ করে তা-ও সম্ভব নয়। এতে সারা বাংলার মানুষের সহযোগিতা লাগবে।’’

পঞ্চায়েত ভোটের আগে একের এক দুর্নীতির অভিযোগ, তাতে তৃণমূল নেতা-বিধায়কদের নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে শাসকদল। তার মধ্যে নীচুতলাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও কোচবিহারে পা দিয়ে এই সব অভিযোগ এবং আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে অভিষেক দাবি করেছেন, তাঁর দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। বিরোধীদের আক্রমণের প্রেক্ষিতে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই? তৃণমূল কী করছে না ভেবে নিজেদের দলের কথা ভাবুন বিরোধীরা। আর গণতন্ত্রে আমি বা বিরোধী দলনেতা শেষ কথা নন, মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীও শেষ কথা নন। শেষ কথা বলবে মানুষই। তাই এই কর্মসূচি সফল না কি ব্যর্থ, সেটাও ঠিক করে দেবেন মানুষই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement