WB Panchayat Election 2023

ভাঙড়ে সৌজন্যের ছবি! আইএসএফ কর্মীর দেহ কবর দেওয়া হচ্ছে, হাত লাগালেন তৃণমূল প্রার্থী

গত বৃহস্পতিবার, মনোনয়ন জমার শেষ দিন ভাঙড়-২ ব্লকে ব্যাপক অশান্তি হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে সে দিন যে তিন জনের প্রাণ যায়, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জয়পুর গ্রামের আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা।

Advertisement
সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩ ০৭:২২
TMC and ISF.

—প্রতীকী চিত্র।

নিহত আইএসএফ কর্মীর দেহ কবর দেওয়া হচ্ছে। তাতে হাত লাগাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী।

পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা থেকে মনোনয়ন— আইএসএফ ও তৃণমূলের মধ্যে বার বার সংঘাত দেখেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। শনিবার দেখল সৌজন্য।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার, মনোনয়ন জমার শেষ দিন ভাঙড়-২ ব্লকে ব্যাপক অশান্তি হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে সে দিন যে তিন জনের প্রাণ যায়, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জয়পুর গ্রামের আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা। অভিযোগ, তৃণমূলের ছোড়া গুলিতে তাঁর মৃত্যু হয়। তৃণমূল সেই অভিযোগ মানেনি।

শনিবার মহিউদ্দিনের দেহ কবর দেওয়া হল গ্রামে। তাঁর বাড়ির পাশেই চালতাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী রেজাউদ্দিন মোল্লার বাড়ি। মহিউদ্দিনের শেষযাত্রায় তিনিও পা মেলান। কবর খোঁড়া থেকে প্রয়োজনীয় নানা কাজে সাহায্য করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের আরও কিছু কর্মী। যা দেখে গ্রামবাসীর মন্তব্য, এই সৌজন্য দু’দিন আগে দেখালে কয়েকটা প্রাণ বেঁচে যেত।

রেজাউদ্দিন বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। গ্রামে কারও কোন বিপদ হলে আমরা সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ি। মহিউদ্দিন আমার ভাইয়ের মতো। তাই তাঁর শেষকৃত্যের কাজ করতে এগিয়ে এসেছি।’’ ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা সহকারী আহ্বায়ক আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, ‘‘মৃত্যু কখনওই কাম্য নয়। আমি ভীষণ মর্মাহত। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও সকলের মধ্যে সৌজন্যবোধও থাকা উচিত।’’

আইএসএফের ব্লক সভাপতি রাইনুর হক বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে, আমাদের দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে ওই তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে এসেছেন। তিনি আমাদের পাশে থেকে শেষকৃত্যের কাজ করেছেন। রাজনৈতিক মতবিরোধ সরিয়ে তিনি যে এগিয়ে এসেছেন, এ জন্য আমরা ওঁকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’ নিহতের পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী মহিউদ্দিনের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর দাদা তথা আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকী।

ওই সংঘর্ষের পরে দু’দিন কেটে গেলেও শনিবার ভাঙড়-২ ব্লক অফিস সংলগ্ন বিজয়গঞ্জ বাজার ছিল থমথমে। সকাল থেকে পুলিশের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে রুটমার্চ চলে। বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠে এ দিনও লাইন দিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় পোড়া গাড়িগুলি। এখনও এলাকায় নানা জায়গায় রয়ে গিয়েছে বোমার দাগ।

এ দিন সকাল থেকে শুরু হয় মনোনয়নপত্র যাচাই। তৃণমূল, আইএসএফ-সহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ব্লক অফিসে আসেন। প্রচুর পুলিশ ও র‌্যাফ মোতায়েন ছিল। ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement