গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শিলিগুড়ি থেকে সদ্য ধৃত প্রাথমিক শিক্ষককে ট্যাব-কাণ্ডের ‘অন্যতম মূলচক্রী’ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, প্রাথমিক শিক্ষকের সঙ্গে যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা তাঁর আত্মীয়। ফলে তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, ওই শিক্ষকই আত্মীয়স্বজন সঙ্গে নিয়ে জালিয়াতি কারবার ফেঁদেছিলেন।
কলকাতার সরশুনায় ট্যাবের টাকা চুরির অভিযোগে রবিবার শিলিগুড়ি থেকে দিবাকর দাস, বিশাল ঢালি এবং গোপাল রায় নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দিবাকর ওরফে বিট্টু ট্যাব-কাণ্ডের ‘অন্যতম মূলচক্রী’। এর আগে লালবাজার দাবি করেছিল, চোপড়া এবং তার আশপাশের এলাকা ট্যাব কেলেঙ্কারির আঁতুড়ঘর। ঘটনাচক্রে, দিবাকরও উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা। ধৃত বিশাল দিবাকরেরই মাসির ছেলে। আর বিশালের দিদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে বিয়ে করেছিলেন গোপাল। বিশাল এবং গোপাল দু’জনের দার্জিলিং জেলার চম্পাসরির বাসিন্দা।
রবিবার রাতে শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি মলের সামনে থেকে তিন জনকে একসঙ্গে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সেই সময়েই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
গোপালের মা যমুনা রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমরা এ সব ঘটনার কিছুই জানি না। রবিবার বৌমাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল ছেলে। সেখানে নাকি নিমন্ত্রণ ছিল! রাতের বেলা আমার বৌমা আমাকে ফোন করে জানায়, ওরা কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। জিজ্ঞেস করলে জানতে পারি, লালবাজারে যাবে ওরা। আজ সকালে থানায় যাওয়ার পর সব ঘটনা জানতে পারি। তবে এ সবের আমরা কিছুই জানি না।’’
বিশালের বাড়ির ভাড়াটিয়া সঙ্গীতা দাস বলেন, ‘‘রবিবার বিশালের জামাইবাবু গোপাল আর ওঁর স্ত্রী এসেছিলেন। দাসপাড়া থেকে এসেছিলেন বিশালের মাসতুতো ভাই দিবাকর। খাওয়াদাওয়া করে বিকেল নাগাদ ওঁরা তিন জনে একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরোন ঘুরতে যাওয়ার নাম করে।’’ আর এক ভাড়াটিয়া বিশাখা সরকার জানান, রবিবার রাতে বিশালের মা-বাবাও একটি ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছেন তাঁরা। ভাড়াটিয়াদের দাবি, সম্প্রতি বিশালদের চালচলনে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করেছেন তাঁরা। বিশাখার কথায়, ‘‘বাড়িতে একের পর এক দামি গাড়ি আসছিল। তখন থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল! কিন্তু এত কিছু তো বুঝে উঠতে পারিনি।’’