গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই নিজের হাতে থাকা শিক্ষা মামলাটি ছেড়ে দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন। বলেছিলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’! সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিচারপতি সেনের ছেড়ে দেওয়া মামলা নিয়ে হাই কোর্টের অন্য বিচারপতির দ্বারস্থ হলেন মামলাকারীরা।
উচ্চ প্রাথমিকের এই মামলার শুনানি দীর্ঘ দিন ধরেই হচ্ছিল বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি উদয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানিও প্রায় শেষ হয়েই এসেছিল বলে দাবি করেছিলেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু মঙ্গলবার আচমকাই সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি সেন। যাঁর সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সংঘাত নিয়ে মঙ্গলবার দিন ভর সরগরম ছিল হাই কোর্ট চত্বর।
মঙ্গলবারই স্বয়ং কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেছিলেন, তিনি এই ঘটনায় লজ্জিত এবং দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। প্রধান বিচারপতির ওই বক্তব্যের পরই ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সেনের বেঞ্চে উচ্চ প্রাথমিকের মামলা শুনানির জন্য ওঠে। মামলাকারীদের একাংশের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে তাঁকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিয়ে কিছু বলতে যেতেই বিচারপতি সেন বলেন, ‘‘যথেষ্ট হয়েছে। ওই বিচারপতির প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। এ সব নিয়ে আমি কিছু বলব না। এই মামলাও আর শুনব না।’’
বিচারপতির এই মন্তব্যের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা বলেন, ‘‘বিচারপতিদের সংঘাতের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। ওই মামলাটির শুনানি প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। এর মধ্যেই বিচারপতি মামলা ছেড়ে দিলেন। এতে বিচারপ্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হবে। আমরা দ্রুত সুবিচার চাই।’’ মঙ্গলবার এই ঘটনাপ্রবাহের পরই বুধবার মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র হাই কোর্টের অন্য ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। ওই বেঞ্চেই আগামী সপ্তাহে উচ্চ প্রাথমিকের মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।