WB Panchayat Election 2023

আর কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলবে না ধরে নিয়েই পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা বৈঠকে কমিশন, নবান্ন

কমিশন সূত্রে খবর, বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী না এলে বিকল্প হিসাবে পুলিশের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা শুরু করা হয়েছে। বাহিনীর অভাবে প্রতি বুথে পুলিশ থাকতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩ ১৫:৪৭
A Photograph of west bengal state election commission.

রবিবার সকালে পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং এডিজি-র সঙ্গে বৈঠক কমিশনের। —ফাইল ছবি।

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারল না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের ছয় দিন আগে নিরাপত্তা নিয়ে আবার বৈঠক করল কমিশন। রবিবার সকালে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং এডিজি-র সঙ্গে বৈঠক হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কমিশন সূত্রে খবর, এই বৈঠকে মূলত পুলিশকে কোথায় কাজে লাগানো হবে তা নিয়ে কথা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘাটতির বিষয়টিও আলোচনায় ওঠে। অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ আনা নিয়ে ওই আধিকারিকদের মধ্যে।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের এক দফা পঞ্চায়েত ভোটে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার কথা। প্রথমে ২২ কোম্পানি এবং দ্বিতীয় ক্ষেপে ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার কথা নির্বাচন কমিশন। এই বাহিনী ইতিমধ্যে রাজ্যে ঢুকতে শুরু করেছে। বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই ভোট রয়েছে। তার আগে ওই বাহিনী আসবে কি না, কমিশন বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোনও পক্ষই চূড়ান্ত কিছু জানায়নি। হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীর সওয়াল থেকে অনেকের অনুমান, বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী কেন্দ্র হয়তো আর দিতে পারবে না। ৩৩৭ কোম্পানি দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। কমিশনও সেই আন্দাজ করে ফেলেছে। তারা জানিয়েছে, কেন্দ্রকে বকেয়া বাহিনী চেয়ে বার বার চিঠি দিয়েও উত্তর পাওয়া যায়নি। তাই বিকল্প হিসাবে পুলিশ ব্যবহার নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে কমিশন।

Advertisement

কমিশন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটে ৬১,৬৩৬ ভোটকেন্দ্রের জন্য প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার জন নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে ৩৭ হাজার। অর্থাৎ, প্রতি বুথে এক জন করেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না। অন্য দিকে, ভোটের জন্য আরও প্রায় ১ লক্ষ নিরাপত্তাকর্মী প্রয়োজন। রাজ্যের কাছে আবার ওই সংখ্যক বাহিনী নেই। এই অবস্থায় ভোটগ্রহণের কয়েক দিন আগে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় কমিশন। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবারের বৈঠকে কোথায়, কত পুলিশ ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘাটতি মেটাতে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড এবং বিহার থেকে পুলিশ নিয়ে আসার পরিকল্পনাও হয়েছে। অন্য একটি সূত্রের মতে, এ নিয়ে পদক্ষেপও শুরু করে দিয়েছে নবান্ন।

প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কি না এ নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা কমিশনের থেকে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে চূড়ান্ত কিছু না জানা গেলেও দু’রকম মত পাওয়া যাচ্ছে কমিশনের তরফে। একটি সূত্র জানাচ্ছে, বাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী আর আসবে না তা ধরে নিয়েই পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। যদি না আসে, তবে বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ। এলাকা টহলদারি, উপদ্রব এলাকায় নজরদারি-সহ আইনশৃঙ্খলার কাজে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হবে। অন্য সূত্রে বলছে, বাকি বাহিনী না এলে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাবে না এটা তো জলের মতো পরিষ্কার। তবে স্পর্শকাতর বা অতি স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ব্যবহার করার বিষয়টি মাথায় রয়েছে কমিশনের। তবে সোমবারই হয়তো বাকি বাহিনী নিয়ে উত্তর জানা যেতে পারে সব পক্ষের তরফে। ওই দিন উচ্চ আদালতে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ এবং আদালত অবমাননা নিয়ে শুনানি রয়েছে। আদালত কোনও নির্দেশ দিলে বা আদালতের কোনও দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে সেই অনুযায়ী বাকি পদক্ষেপ করা হতে পারে। কেন্দ্রের কাছ থেকে বাহিনী না পেয়ে কমিশনও হাই কোর্টের শুনানির দিকে তাকিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement