Manik Bhattacharya

‘হয় ছাড়ুন, না হলে এমন একটা অর্ডার দিন...’! বিচারকের কাছে অদ্ভুত প্রার্থনা বন্দি মানিকের

গত ২৬ অক্টোবর থেকে জেলে রয়েছেন প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। ইতিমধ্যেই বহুবার জামিনের আবেদন করেছেন মানিক। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৮:১২
Manik Bhattacharya asks court to either give him bail or make sure that he does not wake up next morning

মঙ্গলবার স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডি মামলার মানিক ভট্টাচার্যের ভার্চুয়াল শুনানি ছিল বিশেষ আদালতে। ফাইল চিত্র।

জামিনে মুক্তি চাইলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার মানিক ভট্টাচার্য, তবে তা সম্ভব না হলে আদালত আর কী করতে পারে সেই বিকল্পও বলে দিলেন তিনি। রাজ্যের শাসকদলের এই বিধায়ক মঙ্গলবার আদালতকে দু’টি বিকল্প দিয়েছেন। আর সেই দুই বিকল্পেই মানিক শান্তির দোহাই দিয়ে আর্তি জানিয়েছেন। সবটা অবশ্য মুখে বলেননি মানিক। কিছুটা কথায় বললেও বাকিটা বিচারককে ইশারাতেই বুঝিয়েছেন পলাশিপাড়ার বিধায়ক। তবে সেই ইশারার অর্থ বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কারণ ইঙ্গিতটি ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট। মানিক বলেছেন, ‘‘যদি যেতেই হয় তবে একেবারে.. ( তার পর উপরের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ)। ’’

মঙ্গলবার স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডি মামলার ভার্চুয়াল শুনানি ছিল বিশেষ আদালতে। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক। যিনি ইতিমধ্যেই সাড়ে ৪ মাস কাটিয়ে ফেলেছেন জেলে। জামিনের আবেদন করে মানিক বিচারককে প্রথমে বলেন, এমন একটা অর্ডার দিন যাতে রাতটা শান্তিতে ঘুমোতে পারি। কিন্তু তার পরেই নিজের বক্তব্য আরও একটু বদলে মানিককে বলতে শোনা যায়, ‘‘হয় ছাড়ুন, নয়তো এমন একটা অর্ডার দিন যাতে আর ঘুম না ভাঙে!’’

Advertisement

গত ২৬ অক্টোবর থেকে জেলে রয়েছেন প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। ইতিমধ্যেই বহু বার নানা ভাবে জামিনের আবেদন করেছেন মানিক। কিন্তু তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়নি। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল শুনানিতে মানিককে বিচারকে বলেন, ‘‘মাই লর্ড আমি মুক্তি চাই। আমার কিছু বলার আছে। গোটা পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থা দু’ভাগে বিভক্ত। একটি প্রাথমিক, আর একটি একটি উচ্চ প্রাথমিক। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি অবধি পড়ানো হয়। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের অন্তর্ভুক্ত। অথচ ১০০০ পাতার যে চার্জশিটে আমার নাম রয়েছে তার পুরোটাই নবম-দশম এবং অশিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগের সঙ্গে জড়িত। তা হলে আমি কী করে এখানে এলাম? প্রাথমিকে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের কোনও ব্যবস্থা নেই। তা হলে আমি কী করে এই মামলায় যুক্ত হলাম?’’

মানিক নিজের গ্রেফতারি নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন তুলে এর পর আদালতকে বলেন, ‘‘স্যর, হয় আমাকে ছেড়ে দিন না হলে এমন একটা অর্ডার দিন যাতে আজ রাতে ঘুমোলে কাল সকালে যেন আমার চোখ না খোলে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজ্য ছেড়ে যাব না। যদি যেতেই হয়, তা হলে একেবারে...’’ বলে উপরের দিকে ইশারা করেন মানিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement