বর্ধিত হারে ডিএ-র বিজ্ঞপ্তি। নিজস্ব চিত্র।
এ বার অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুল ও টোলের শিক্ষকেরাও সংশোধিত হারে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পাবেন। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানাল শিক্ষা দফতর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুল, মহার্ঘ ভাতাপ্রাপ্ত স্কুল (ডিএ গেটিং স্কুল) এবং পশ্চিমবঙ্গে থাকা সংস্কৃত টোলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা সংশোধিত হারে ডিএ পাবেন। দিন কয়েক আগেই ‘মহার্ঘ ভাতাপ্রাপ্ত স্কুলগুলি’কে ডিএ দেওয়ার বিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছিল অর্থ দফতর। সূত্রের খবর, একই সঙ্গে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান স্কুল ও সংস্কৃত টোলগুলিকেও ডিএ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অর্থ দফতর থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে সে কথা জানিয়েছে। গত মার্চ মাসের পয়লা তারিখ থেকে সংশোধিত হারে ডিএ পাবেন তাঁরা।
সাধারণ সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতনের থেকে এই সমস্ত স্কুলের শিক্ষকদের বেতন অনেকটাই কম। এই স্কুলের শিক্ষকেরা বর্তমানে রোপা ২০০৯ অনুযায়ী বেতন পান। আর আইনগত ভাবে তাই ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা হলে তাঁদের ক্ষেত্রে ডিএ-র পরিমাণ বেড়ে ৮ শতাংশ হয়। সেই মর্মে অর্থ দফতর ৮ শতাংশ হারে তাঁদের ডিএ মঞ্জুর করেছে। ২০২১ সাল থেকে তাঁদের ডিএ বকেয়া ছিল। ২০২৩ সালে রাজ্য সরকার ৩ শতাংশ বর্ধিত ডিএ ঘোষণা করলেও, তাঁরা সেই ডিএ পাননি। আবার গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকুট পাঠিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে দিয়ে আরও ৩ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে দেন। তাই সেই দুই কিস্তি ডিএ-র পরিমাণকে যোগ করে মার্চ মাস থেকে ১৬ শতাংশ বর্ধিত ডিএ পাবেন ওই স্কুলের শিক্ষকেরা।
শিক্ষা দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই শিক্ষকদের দিয়ে এ বিষয়ে ঘোষণা করিয়ে দেওয়া হতে পারে। প্রশাসনিক মহলে এমন খবর চাউর হওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যেখানে সর্ব স্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৩ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে কেন ওই বিশেষ স্কুলে শিক্ষকদের ৮ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়া হচ্ছে? অর্থ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সরকারি নিয়ম ও বিধি মেনেই এই ডিএ দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনও রকম আইনি বা পদ্ধতিগত ত্রুটি নেই।
তবে এ ক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের কথায়, ‘‘মার্চ মাস থেকে শিক্ষকেরা ১৬ শতাংশ ডিএ পাবেন এটা অত্যন্ত ভাল কথা। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে ২ বছর তাদের যে ডিএ বকেয়া রয়ে গিয়েছে সেই বকেয়া তাঁরা কবে পাবেন সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি অর্থ দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই বিষয়েও দ্রুত নিষ্পত্তি করে বকেয়া ডিএ-র সমস্যাও মিটিয়ে দেওয়া হতেই পারে। রাজ্যের শিক্ষকদের একাংশ ডিএ পেলেও সরকারি কর্মীদের বৃহৎ অংশ এখনও ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে, ফলে সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মীদের সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।