দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের দৃশ্য, মুর্শিদাবাদে। —নিজস্ব চিত্র।
দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় শনিবার রাতে বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। দু’জন হাসপাতালে ভর্তি। কিছু বাড়িঘর ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। একাধিক জায়গায় রাস্তা, রেল লাইন অবরোধ হয়েছে। গোলমাল থামাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে আট জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে রবিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। শনিবার রাত থেকে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়েই ইন্টারনেট বন্ধ। মঙ্গলবার পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। বেলডাঙায় বিশাল পুলিশ বাহিনী রয়েছে। এই থানা এলাকায় ২৪ ঘণ্টার জন্য ১৬৩ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। ধৃতদের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত হয়েছে।
বেলডাঙায় কার্তিক পুজো থাকায় এখন বহু মানুষের ভিড়। তার মধ্যে শনিবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দীর্ঘ ক্ষণ যান চলাচল বন্ধ ছিল। শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় ট্রেন চলাচলও ব্যাহত হয়। লালগোলাগামী ভাগীরথী এক্সপ্রেস দীর্ঘ ক্ষণ বেলডাঙা স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। শনিবার রাত ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ সেটি লালগোলার উদ্দেশে রওনা দেয়। লালগোলা এবং শিয়ালদহমুখী একাধিক ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে পড়ে। শনিবার রাতে বেলডাঙায় যান মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব, আনন্দ রায়।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ‘তোষণের রাজনীতি’র ফলে পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। তাঁর মন্তব্য, “রাজ্যের ব্যর্থ, নির্লজ্জ পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি এ সব শুনে শান্তিতে ঘুমোচ্ছেন? না কি পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে?” তাঁর আবেদন, কেউ যেন প্ররোচনায় পা না দেন।
হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীও রবিবার বলেন, “প্রশাসন তৎপর ছিল। আমরা চাই জেলায় সম্প্রীতি রক্ষা করে সকলে মিলেমিশে থাকি। এক জন, দু’জন অপশক্তির জন্য পরিস্থিতি বিষাক্ত হতে পারে, কিন্তু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ যেন তার দ্বারা প্রভাবিত না হই, গুজবে কান না দিই।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “সর্ব স্তরের সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, উস্কানিমূলক প্রচারে বিভ্রান্ত না-হয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখুন।”
তৃণমূলের কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “অশুভ শক্তি প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলাকে হেয় করে দেখানোর চক্রান্ত। মানুষের কাছে অনুরোধ, প্ররোচনায় পা দেবেন না। শান্ত থাকুন। পুলিশ-প্রশাসনের উপর আস্থা রাখুন।”