গ্রাফিক—শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপি থেকে কি বিদায় নিচ্ছেন প্রবীণ নেতা তথাগত রায়? শনিবার সকালে তথাগতের করা একটি টুইট ঘিরে এমনই জল্পনা ছড়িয়েছে পদ্মশিবিরের অন্দরে। সেই টুইটে তথাগত লিখেছেন, ‘আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি!’ এর পরই রাজনৈতিক মহলে তথাগতের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ভরাডুবির পর থেকেই টুইটারে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল। বিজেপি-র এই পরাজয়ের জন্য নিজের মত তিনি ব্যক্ত করে চলেছেন টুইটারের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক-সহ বাংলার বিভিন্ন নেতা এবং তাঁদের কাজকর্মকে নিশানা করেছিলেন তিনি। ভোটের আগে বিভিন্ন অভিনেত্রীদের দলে নেওয়ার বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। মে মাসেই বিজেপি-র তারকা প্রার্থীদের একাংশকে ‘নগরীর নটী’ বলে আলোড়ন ফেলেছিলেন। এবং ‘তাঁদেরকে টিকিট দিয়েছিল কে?’— এই প্রশ্ন টুইটের মাধ্যমে তিনি ছুড়েছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিব প্রকাশ এবং অরবিন্দ মেননদের উদ্দেশে।
বিধানসভা উপনির্বাচনেও বিজেপি ধরাশায়ী হতে টাকা এবং নারীর প্রসঙ্গ ফের উত্থাপন করেন এ রাজ্যের বিজেপি-র অন্যতম প্রাচীন মুখ। ৮ নভেম্বরের সেই টুইটে তথাগত লিখেছিলেন, ‘৩ থেকে ৭৭ (এখন ৭০) গোছের আবোলতাবোল বুলিতে পার্টি পিছোবে, এগোবে না। অর্থ এবং নারীর চক্র থেকে দলকে টেনে বার করা অত্যাবশ্যক।’ এই টুইটের পর থেকেই তথাতগের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপি নেতারা। যদিও তাতে দমে না গিয়ে তথাগত লিখেছিলেন, ‘বিজেপির শুভানুধ্যায়ীরা বলছেন, টাকা ও নারী নিয়ে আমার অভিযোগ প্রকাশ্যে নয়, দলের ভিতরে করা উচিত। আমি সবিনয়ে জানাই, সে সময় পেরিয়ে গেছে। বিজেপি আমাকে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। কিন্তু নিজেদের চালচলন যদি আমূল সংস্কার না করে তা হলে পশ্চিমবঙ্গে দলের বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী।’ এই টুইট নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর।
এর পরই এল তথাগতের শনিবারের টুইট। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কারুর কাছ থেকে বাহবা পাবার জন্য আমি টুইটগুলো করছিলাম না। দলের কিছু নেতৃস্থানীয় লোক যেভাবে কামিনী-কাঞ্চনে গা ভাসিয়েছিলেন সেটা সম্বন্ধে দলকে সজাগ করার জন্য করছিলাম। এবার ফলেন পরিচীয়তে। পুরভোটের ফলের জন্য প্রতীক্ষায় থাকব। আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি!’’ এর পরই তথাগতের দল ছাড়া নিয়ে জল্পনা জোরদার হয়েছে। এই টুইটের পর সাংবাদিকরা তাঁকে দলছাড়ার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু এই প্রসঙ্গে তিনি আর কিছু বলেননি, তিনি বলেছেন, ‘‘আমার যা বলার টুইটারে লিখেছি। এর বেশি আর কিছু আমার বলার নেই।’’
কারুর কাছ থেকে বাহবা পাবার জন্য
— Tathagata Roy (@tathagata2) November 20, 2021
আমি টুইটগুলো করছিলাম না। দলের কিছু নেতৃস্থানীয় লোক যেভাবে কামিনী-কাঞ্চনে গা ভাসিয়েছিলেন সেটা সম্বন্ধে দলকে সজাগ করার জন্য করছিলাম।
এবার ফলেন পরিচীয়তে। পুরভোটের ফলের জন্য প্রতীক্ষায় থাকব।
আপাতত বিদায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি !