—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে করোনাকালে বসে যাওয়া বাসগুলি নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আবেদন। বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনের তরফে পরিবহণ দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এই মর্মে। সম্প্রতি জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের তরফে তাদের আইনজীবী এই চিঠিটি পাঠিয়েছেন। আইনজীবী সুচেতা পালের তরফে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহনকে। সোমবার পরিবহণ দফতরকে পাঠানো ওই চিঠিতে সংগঠনের তরফে মূলত সাতটি দাবির উল্লেখ রয়েছে। এই সাতটি দাবির ক্ষেত্রেই রয়েছে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসের প্রয়োজনীয়তার কথা। করোনার সময়ে লকডাউনের জেরে পরিবহণ শিল্পের বেহাল দশা। এই মুহূর্তে বেশি সংখ্যায় বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়া হলে নতুন বাস রাস্তায় নামানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। বর্তমানে পরিবহণ শিল্পের যা অবস্থা তাতে বাসমালিকেরা মোটা টাকা ইএমআই দিয়ে রাস্তায় বাস নামানোর অবস্থায় নেই। তা ছাড়া যে বাসগুলি কোভিডের জন্য চলতে পারেনি তাদের বয়সের ভিত্তিতে বাতিলের সিদ্ধান্ত দু’বছর স্থগিত রাখা হোক। এমনই দাবি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট।
কলকাতা হাই কোর্টে বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, করোনার জেরে লকডাউনের জন্য দু’বছর বাসগুলি রাস্তায় চলাচল করেনি। অথচ এমন অনেক বেসরকারি বাস রয়েছে, যাদের মেয়াদকাল ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু কোভিডের সময় দু’বছর বেসরকারি বাস রাস্তায় চলাচল না করলেও সেগুলি এখনও চলাচলের উপযুক্ত রয়েছে। তা ছাড়া দু’বছর চলাচল বন্ধ থাকায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাসমালিকেরা এখনই তা বাতিল করার অবস্থায় নেই। পাশাপাশি করোনার জেরে আর্থিক ধাক্কা সামলে নতুন বাস কেনা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তাঁরা। তাই তাঁরা বসে থাকা বাসের মেয়াদ দু’বছর বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। এমন আবেদনের ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবহণ দফতরকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেয়।
সেই নির্দেশ পাওয়ার পর দফায় দফায় বৈঠক করে বেশি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি বলে দাবি করে আইনজীবী মারফত পরিবহণসচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে বাসমালিকদের সংগঠনটি। উল্লেখ্য, পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্ট ২০০৯ সালে এক নির্দেশে বলেছিল, কলকাতার পরিবেশ বাঁচাতে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এলাকায় ১৫ বছরের বয়সসীমার ঊর্ধ্বে বাস-সহ পেট্রল-ডিজেল চালিত কোনও গাড়ি চালানো যাবে না। আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর করতে অগস্ট মাসের পয়লা তারিখ থেকে বাস বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে পরিবহণ দফতর। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের সময় বাস না চলা নিয়ে পাল্টা যুক্তি সাজিয়েছে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্তমানে পরিবহণ শিল্পের যা অবস্থা তাতে পরিবহণ দফতর এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে আমরা বাসমালিকেরা ছাড়াও উপকৃত হবেন বহু সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় অতিরিক্ত বাস নামানোর কথা বলছেন। আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে আমরাও অতিরিক্ত বাস রাস্তায় নামিয়ে মানুষকে পরিষেবা দিতে পারব।’’