Suvendu Adhikari

কমিশনের উপর আরও চাপ বিজেপির, পঞ্চায়েতে গণনার পরেও রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার দাবি

শুভেন্দুর অভিযোগ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ হয়েছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার পরেও রাজ্যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ২০:১২
Suvendu Adhikari slams State election Commission and wants CAPF for Panchayat Election

(বাঁ দিকে) রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। (ডান দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পরেই বিরোধীরা দাবি তুলেছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করাতে হবে। কমিশন না-মানায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত কমিশন ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এ বার বিরোধীদের দাবি, ভোট মিটলেই বাহিনী ফেরত পাঠানো যাবে না। বরং গণনার পর আরও ১৫ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে রাখতে হবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল শুক্রবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়েছিল। সেখান থেকে বেরোনোর পরেই শুভেন্দু জানিয়েছেন, তাঁরা কমিশনের কাছে ওই দাবি রেখেছেন।

কমিশনে গিয়ে ওই প্রতিনিধি দল ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের মতো রাজ্যের সব বুথে, গণনাকেন্দ্রে সশস্ত্র বাহিনী রাখার দাবি জানিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’র অভিযোগ তুলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার পর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে ১৫ দিন রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনী রাখতে হবে।’’ তবে এ দিন নির্দিষ্ট কোনও দফায় ভোট করার দাবি জানাননি শুভেন্দু। কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “মনোনয়ন পেশের পরেও কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ৪৮ ঘণ্টা হাতড়ানোর পর তালিকা প্রকাশিত হলেও সেখানে মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণাকে রাখা হয়নি।” এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “আমরা জানি না কত আসনে ভোট হচ্ছে, কত আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে!” রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “শুধু বিরোধী বা বিজেপির অভিযোগ নয়, কলকাতা হাই কোর্টের মাননীয় বিচারপতির নির্দেশকে লঙ্ঘন করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার কিংবা তাঁর অফিস।” রাজ্যের যে সব এলাকায় বিজেপির জনপ্রতিনিধি রয়েছে, সেখানে কী ভাবে বিজেপি-সহ অন্য বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

Advertisement

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর আগেই চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু আবারও আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি রাজীবের যোগদান রিপোর্ট (জয়েনিং রিপোর্ট) ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের প্রশংসাও করেন। এক দিকে রাজ্যপালের প্রশংসা, অন্য দিকে আদালতে যাওয়ার হুমকি— এ ভাবেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরে বিজেপি ‘চাপ’ তৈরি করতে চাইছিল। তার মধ্যে গণনার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি তুলে কমিশনকে বিজেপি আরও চাপে রাখতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে তুলনা করে শুভেন্দু বলেন, “তবু সেই সময় প্রতি দিন সাংবাদিক বৈঠক করতেন কমিশনের সচিব কিংবা মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক।” সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই, কমিশনকে প্রতি দিন সাংবাদিক বৈঠক করার আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি জানান যে, কমিশন তাঁকে জানিয়েছে, প্রতি দিন ৭টায় সাংবাদিক বৈঠক করবে তারা। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত অভিযোগ নেওয়ার পাশাপাশি, সেগুলির সমাধান করা হচ্ছে কী ভাবে, তা-ও প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু।

আদালত নিযুক্ত পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণে সব বুথে, গণনাকেন্দ্রে সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তবে পর্যবেক্ষকের বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টে বিচারাধীন বলে এ নিয়ে সবিস্তারে কিছু বলতে চাননি তিনি। তবে ভোটের দফার বিষয়টি চূড়ান্ত করার বিষয়টি কমিশনের উপরেই ছাড়তে চেয়েছেন তিনি। পটনার বিরোধী বৈঠক নিয়ে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যারা আজ গিয়েছিল সপরিবারে, আদর্শহীন কতগুলি চোরের সিন্ডিকেটের জোট। এঁদের লক্ষ্য হল দুর্নীতিকে বাঁচিয়ে রাখা।”

আরও পড়ুন
Advertisement