রাজভবনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের একাধিক বিল আটকে আছে রাজভবনে। রাজ্যপাল সই করছেন না। তাই সেই বিলগুলি আইন হিসাবে কার্যকরও করা যাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই মামলায় এ বার রাজভবনকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। নোটিস জারি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জন্যও।
রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। সংবিধানের রক্ষাকবচ রয়েছে তাঁর কাছে। সেই কারণে সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেনি রাজ্য। মামলাটি করা হয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সচিবের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। যদিও মৌখিক ভাবে রাজ্যপালকেই নোটিস দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
রাজ্য বিধানসভায় যে বিলগুলি পাশ করা হয়, রাজ্যপালের সম্মতি পেলে তা আইনে পরিণত হতে পারে। সেই কারণে বিল স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হয় রাজভবনে। কিন্তু রাজ্যের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে প্রচুর বিল রাজভবনে জমে রয়েছে। রাজ্যপাল তাতে সম্মতি দেননি। কোনও বিল নিয়ে রাজ্যপাল নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তাঁর দু’টি করণীয় থাকে। বিলটি সিদ্ধান্তের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো অথবা বিল সংশোধনের জন্য বিধানসভায় ফেরত পাঠানো। এ ক্ষেত্রে রাজভবন থেকে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্যপাল নিজেও সিদ্ধান্ত নিয়ে বিলে স্বাক্ষর করেননি। আবার বিলগুলি রাষ্ট্রপতির কাছে বা সংশোধনের জন্য বিধানসভাতেও পাঠাননি। এ ভাবে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল দীর্ঘ দিন রাজভবন ফেলে রাখতে পারে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, তাঁরা রাজভবন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে এ বিষয়ে নোটিস জারি করছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও রাজ্য বিধানসভার বিল নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত বেধেছিল। রাজ্যপালের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার বিল পাশ হয়েছিল বিধানসভায়। সেই বিল রাজভবনে আটকে থাকা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সরকার। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এ বার শুধু একটি বিল নয়, অনেক বিল রাজভবনে আটকে রাখার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে সরকার।