Supreme Court Hearing on R G Kar Incident

কোথায় ময়নাতদন্তের ‘চালান’? হাসপাতালে কী করা হয়েছে জানতে চাই! সুপ্রিম-প্রশ্নের মুখে রাজ্য

সোমবারের শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেয় সিবিআই। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর রাজ্যের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:২৭
সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর-মামলার শুনানি।

সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর-মামলার শুনানি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্যকে। সোমবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্ন, “মৃতদেহ কখন ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়? তার চালান কোথায়?” শুনানির একটি পর্যায়ে রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, আরজি কর হাসপাতালে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “হাসপাতালে কত বরাদ্দ হয়েছে জানতে চাই না। ওই হাসপাতালে কী করা হয়েছে জানতে চাই।”

Advertisement

সোমবারের শুনানিতে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেয় সিবিআই। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর মূলত দু’টি প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানতে চান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলায় নম্বর দায়ের করা হয়েছিল কখন? রাজ্য জানায়, মৃত্যুর শংসাপত্র বা ডেথ সার্টিফিকেট দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে দেওয়া হয়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয় দুপুর ২টো ৫৫ মিনিটে। প্রধান বিচারপতির দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, জেনারেল ডায়েরি কখন দায়ের করা হয়? রাজ্য জানায়, দুপুর ২টো ৫৫ মিনিটে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় অপরাধস্থলে তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্তকরণ কখন হয়েছিল, তা-ও জানতে চান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। রাজ্য জানায় রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত তল্লাশি এবং তল্লাশিতে পাওয়া জিনিস বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া চলেছিল।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সিবিআইয়ের রাজ্য তুলে দিয়েছিল কি না, সোমবারের শুনানিতে তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অভিযুক্তকে ঢুকতে এবং বেরোতে দেখা গিয়েছে। ফলত, ভোর সাড়ে ৪টে থেকে ফুটেজ থাকার কথা। ওই ফুটেজ কি সিবিআইকে দেওয়া হয়েছিল? কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল (এসজি) তুষার মেহতা আদালতে জানান, সিসি ক্যামেরার ২৭ মিনিটের ৪টে ক্লিপিংস সিবিআইকে দিয়েছে রাজ্য।

রাজ্যের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন করার পাশাপাশি বেশ কিছু নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশে বলেন, “পরবর্তী শুনানিতে জানাবেন, কী কাজ করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের মাথায় ডিস্ট্রিক কালেক্টরদের নিয়োগ করুন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে আমাদের জানান।” সোমবারই আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। কয়েক জন জড়িতের নাম মুখবন্ধ খামে দেওয়া হয়।

আদালতে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয় যে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক, আরজি কর হাসপাতালে ৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সহযোগিতা করছে না। অভিযোগ শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, “রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের সিনিয়র অফিসার এবং সিআইএসএফের সিনিয়র অফিসার আলোচনা করে পুরো বন্দোবস্ত করবেন।” প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, সোমবার রাত ৯টার মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সিআইএসএফকে দেবে রাজ্য। শীর্ষ আদালতে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, তার সময় উল্লেখ করা নেই। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, সব কিছু উল্লেখ রয়েছে।

সোমবারের শুনানিতে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজ যোগ দিতে বলেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “বাস্তব পরিস্থিতি কী চলেছে, আমরা সবাই জানি। কিন্তু চিকিৎসকেদের কাজে ফিরতে হবে। তাঁদের প্রধান কাজ চিকিৎসা করা। তাঁদের নিরাপত্তার নির্দেশ আমরা দিয়েছি। তাঁরা কাজে যোগ না দিলে আমরা প্রত্যেককে নোটিস দেব। এই প্রসঙ্গেই রাজ্যকে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, “আপনারা নিশ্চিত করুন, যাঁরা কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন না। এমনকি তাঁদের বদলি করাও যাবে না।”

আরও পড়ুন
Advertisement