(বাঁ দিক থেকে) সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায়। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের অন্দরে লড়াই থামার লক্ষণ নেই! মঙ্গলবারের পর বুধবার সকালেও নেতাদের পরস্পরকে আক্রমণের ধারা বজায় রইল। ফের প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায়ের আক্রমণের মুখে পড়লেন দলেরই আরও এক প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে উত্তর কলকাতার সাংসদকে রাজনীতি না করে অভিনয় করলে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেতেন বলে আক্রমণ করেছিলেন তাপস। বুধবার সকালে যেন সেখান থেকেই আক্রমণ শুরু করলেন তিনি। বললেন, ‘‘যারা মমতাপন্থী, যারা তৃণমূলপন্থী, যারা অভিষেকপন্থী, সুদীপ তাদের পছন্দ করে না।’’
তাপসের আক্রমণের জবাবে নাম না করে মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিক্রিয়ায় সুদীপ বলেছিলেন, “একটা কথাই বলব, হাতি চলে বাজার…। আর কিছু বলব না।” তাঁর আরও সংযোজন, “কে কী বলবেন, সেটা তাঁদের নিজের রুচির ব্যাপার। মানুষ বিচার করবেন।” এর পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে তাপস বলেন, ‘‘ও নিজেকে হাতি ভাবে, কিন্তু ও মোটেই হাতি নয়। সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলতেন, ‘দেখ, দেখ, কেমন পেঙ্গুইনের মতো হেঁটে আসছে!’ আর যদি হাতি হয়ও, সেটা সাদা হাতি, অনুৎপাদক সব ক্ষেত্রে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, কারও এত ঔদ্ধত্য, স্পর্ধা এবং ক্ষমতা নেই। আমি যে আজও দলটা করি, তা-ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে।’’
তাপসের কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য তৃণমূল করি। কিন্তু যদি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুষ্ট করে চলতে হয়, তা হলে নিশ্চয়ই ভাবতে হবে আমাকে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আমি দল করি নাকি? আমাদের দলে তো ছয়-সাত বছর ছিল না ও! বলেছিল, দলটা নাকি উঠে যাবে! ওরা স্বামী-স্ত্রী মিলে কী কী করেছিল, আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে আবারও তুলব। যারা দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে, শীঘ্রই চিহ্নিত করা হবে। যারা মমতাপন্থী, যারা তৃণমূলপন্থী, যারা অভিষেকপন্থী, সুদীপ তাদের পছন্দ করে না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘নিজের মতো করে উত্তর কলকাতার সাতটি ওয়ার্ডে কিছু করতে চাইছে ও। আমাকে ডাকবে না বলে, কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড সভাপতিদের নিষেধ করে দেয়। ওর থেকে বেশি দিন তৃণমূল করছি। হিসাবে মাঝের ছ-সাত বছর বাদ দেওয়া হোক, যে সময় ও ছিল না দলে। ১৫ বছর ধরে আমার উপর যে অত্যাচার, অন্যায়, অবিচার হয়েছে, যে অসভ্যতা, অসম্মানের শিকার হয়েছি, তার বিচার হোক।’’