পঞ্জাবে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুদ্ধ কৃষকেরা। ছবি: পিটিআই।
২৬ নভেম্বর থেকে অনশন শুরু করেছেন পঞ্জাবের কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল। এখনও চলছে তাঁর ‘আমরণ অনশন’ কর্মসূচি। সোমবার তা ২৮ দিনে পা রেখেছে। শরীর ক্রমশ ভাঙছে ডাল্লেওয়ালের। চিকিৎসকদের একটি দল নজর রাখছেন তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর। তাঁদের উদ্বেগ, এ ভাবে চলতে থাকলে হৃদ্যন্ত্র বিকল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল হতে পারে অনশনরত কৃষকনেতার একাধিক অঙ্গও।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডাল্লেওয়ালের স্নায়ুতন্ত্র মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রক্তচাপ বার বার ওঠা-নামা করছে। শরীরে প্রোটিন এবং ফ্লুইডের মাত্রাও ভীষণ ভাবে কমে গিয়েছে। তাঁর যকৃৎ এবং অন্য অঙ্গগুলির অবস্থাও খারাপ। যে কোনও সময়ে তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত রোগীদের আইসিইউতে ভর্তি করানো প্রয়োজন।
ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি), কৃষি ঋণ মকুব, পেনশনের ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতের বিল না-বাড়ানোর মতো বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কৃষকদের আন্দোলন চলছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দিল্লি সংলগ্ন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শম্ভু এবং খানাউড়ি সীমানায় অবস্থানে বসে রয়েছেন কৃষকেরা। ২৬ নভেম্বর কৃষকনেতা জগজিৎ সিংহ ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশন শুরু করার পর আন্দোলন নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।
সুপ্রিম কোর্টও গত সপ্তাহে জানিয়েছে, পঞ্জাবের আন্দোলনরত কৃষকদের দাবিদাওয়া এবং প্রস্তাব শোনার জন্য আদালতের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। সে দিন অনশনরত কৃষকনেতা ডাল্লেওয়ালের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেয় শীর্ষ আদালত। পঞ্জাব সরকার যাতে অবিলম্বে তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দেয়, সে কথাও জানিয়েছিল আদালত।
কিন্তু অনশনস্থল ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না ডাল্লেওয়াল। আন্দোলনরত কৃষকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের নেতার শরীরে কিটোন ব়ডির মাত্রা ৬.৯ হয়ে গিয়েছে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি। কৃষক নেতা সুরজিৎ সিংহ ফুল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ডাল্লেওয়ালকে জোর করে অনশনস্থল থেকে তোলার চেষ্টা হলে রক্তারক্তি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন।