DA Strike

ডিএ নিয়ে ধর্মঘটে কতটা সচল রাজ্য প্রশাসন? ‘স্তব্ধ করে দেওয়া’র দাবির পাল্টা ‘বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি’!

ধর্মঘটে শামিল সংগঠনগুলির দাবি, রাজ্যের সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে কাজকর্ম ‘স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে’। রাজ্যের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি, ধর্মঘটের ‘বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি’।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৩ ১১:৪৬
State govt Employees organizations have conflicting claims about the impact of Friday’s DA strike in WB

রাজ্যে ধর্মঘটের প্রভাব নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি কর্মচারী সংগঠনগুলির। নিজস্ব চিত্র।

বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শুক্রবার রাজ্য প্রশাসনকে অচল করে দেওয়ার কথা বলেছিল সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠন। কিন্তু ধর্মঘটের দিন রাজ্য সচল রইল না অচল, তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি করতে শোনা গেল কর্মচারী সংগঠনগুলির তরফে। ধর্মঘটে শামিল সংগঠনগুলির দাবি, শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্যের প্রায় সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে কাজকর্ম ‘স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে’। অন্য দিকে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি, সরকারি অফিসগুলিতে ধর্মঘটের ‘বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি’। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সকাল ১১টা পর্যন্ত নবান্ন, বিকাশ ভবনে কর্মীদের হাজিরা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে নব মহাকরণ, খাদ্য ভবন, ক্রেতাসুরক্ষা ভবন, কৃষিবিপণন ভবনে। অধিবেশন চলায় স্বাভাবিক হাজিরা রয়েছে বিধানসভাতেও। মহাকরণে যে ক’টি দফতর খুলেছে, সেখানে কর্মীদের হাজিরার সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় খানিকটা কম বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ডিএ নিয়ে ধর্মঘটে শামিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের নেতা তাপস চক্রবর্তী বলেন, “ধর্মঘটের সর্বাত্মক প্রভাব পড়েছে।” খাদ্য ভবন, নব মহাকরণে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। কর্মচারীদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটিও শুক্রবারের ধর্মঘটে শামিল হয়েছে। সংগঠনের অন্যতম নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী ধর্মঘটের প্রভাব প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রত্যাশামতোই কর্মচারীবন্ধুরা রাজ্য প্রশাসনকে অচল করে দিয়েছেন। শুধু কলকাতা নয়, সারা রাজ্যেই এই ধর্মঘট সফল।” তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী অবশ্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ধর্মঘটের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি রাজ্যে। নবান্নে অন্য দিনের তুলনায় হাজিরার পরিমাণ বেশি। রাজ্যের প্রধান সচিবালয়কেই তো অচল করতে পারলেন না ধর্মঘটীরা।” এর পাশাপাশি তাঁর দাবি, বিকাশ ভবন, জলসম্পদ ভবনের মতো বিধাননগরে অবস্থিত সমস্ত সরকারি কার্যালয়ে উপস্থিতির হার অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে অবশ্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গোলমালের খবর আসতে থাকে। ধর্মঘটীদের বিরুদ্ধে কোথাও জোর করে স্কুল বা সরকারি কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আবার শাসকদলের কর্মী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় হয়ে কার্যালয় খুলে রাখার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ডিএ-ধর্মঘটের সমর্থনে হুগলি জেলা শিক্ষা ভবনের গেট বন্ধ করে বিজেপির পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক জন বিজেপি কর্মী গেটের সামনে বিক্ষোভও দেখান। হাওড়ার বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুক্রবার ক্লাস নেননি বেশ কয়েক জন শিক্ষক।

ধর্মঘটের প্রভাব পড়ে উত্তরবঙ্গেও। ধর্মঘটীরা কোচবিহারের অফিস পাড়ায় যৌথ মিছিল বার করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় জেলাশাসক ও সদর মহকুমা শাসক-সহ অন্যান্য অফিসের গেট। অফিসের গেট আটকে দেওয়া হয়। যে সমস্ত অফিসের কর্মীরা শুক্রবার কাজে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে এবং ধর্মঘটে শামিল হতে যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়। ডিএ, শূন্যপদে নিয়োগ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি কলেজের সামনে অবস্থানে বসেন ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র কর্মীসমর্থকরা। পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যায়।

Advertisement
আরও পড়ুন