বৃদ্ধি পেল সিভিক ভলান্টিয়ারদের অবসরকালীন ভাতা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
গত সপ্তাহেই কলকাতা-সহ সারা রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুজোর বোনাস বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেছিল নবান্ন। বুধবার রাজ্য সরকার আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যাতে কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের অধীনস্থ সিভিক ভলান্টিয়ারদের অবসরের সময়ে এককালীন টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এত দিন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা অবসরের সময়ে তিন লক্ষ টাকা পেতেন। এ বার থেকে তাঁরা পাবেন পাঁচ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, ৪০ শতাংশ অর্থ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুজোর বোনাস এবং অবসরের সময়ে এককালীন অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করার এই সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন বিরোধীরা।
গত বার সিভিক ভলান্টিয়ারদের পুজোর বোনাস নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। নবান্নের তরফে প্রথম যে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল, তাতে কলকাতার সিভিক ভলান্টিয়ারদের বোনাস ৫,৩০০ টাকা থাকলেও জেলার সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণ ছিল ২,০০০ টাকা। তা নিয়ে ‘বৈষম্যের’ অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী নেতা গোটা বিষয়টিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেও অভিযোগ করেছিলেন। শুভেন্দুর বক্তব্য ছিল, কলকাতার সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ৫,৩০০ টাকা পান। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু জেলার সিভিক ভলান্টিয়ারেরা কেন বঞ্চিত হবেন? কেন তাঁদের কম অর্থ দেওয়া হবে? শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, জেলার প্রতি ‘বিমাতৃসুলভ মনোভাব’ দেখাচ্ছে রাজ্য সরকার।
তার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের মতোই রাজ্যের অন্য জেলায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারেরাও সমান অঙ্কের পুজোর বোনাস পাবেন। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সেই বর্ধিত অঙ্ক পেয়েছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। এ বছর সকলের জন্যই পুজোর বোনাস ৬,০০০ টাকা করার কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি অবশ্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের অবসরকালীন ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়েও সরকারকে আক্রমণ করেছে। রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী বলেন, ‘‘আরজি করে বলির পাঁঠা করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে। তার ফলে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের মনোবল ধাক্কা খেয়েছে। এই বাহিনীই তো তৃণমূলের হয়ে ভোট করায়। নেতাদের তোলাবাজিতে সঙ্গত করে। তাই তাদের মনোবল চাঙ্গা করতেই পর পর এই সিদ্ধান্তগুলি নিচ্ছে নবান্ন।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারেরা তো চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী। তা হলে সরকারের অন্য দফতরের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের জন্যও তো একই নিয়ম হওয়া উচিত। কিন্তু তা হচ্ছে না। আসলে মুখ্যমন্ত্রী একটা নীতিতে চলছেন। তা হল, তুমি আমায় দেখে দাও, আমি তোমায় পুষিয়ে দেব। এটা গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে ভিতর থেকে ক্ষয়িষ্ণু করে দিচ্ছে।’’