রাজীব সিংহ। —ফাইল চিত্র
বিরোধিতা নয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে চলবে বলেই জানিয়ে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রাজ্যের সবক’টি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে কমিশনকে। বৃহস্পতিবার ওই রায়ের পর ফোনে নবনিযুক্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘হাই কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে তা কার্যকর করব।’’
এর আগে পঞ্চায়েত নিয়ে জনস্বার্থ মামলার রায়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হাই কোর্ট বলেছিল, রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। কিন্তু তার পরও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং কমিশন আরও সময় চেয়েছিল হাই কোর্টের কাছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জিও জানিয়েছিল তারা। কিন্তু হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের বেঞ্চ বৃহস্পতিবারের নির্দেশে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘‘বুধবার হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। আইনশৃঙ্খলার দিক থেকে দেখলে তারা এখনও কোনও স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে পারেনি। কমিশন আরও দু’দিন সময় চেয়েছে। আদালত মনে করছে সময় যত গড়াবে পরিস্থিতি তত খারাপ হবে। তাই কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, রাজ্যের সমস্ত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করবে। আদালতের এই নির্দেশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে।’’
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের পর রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পায় না, তাদের এই নিয়ে মাথাব্যথাও নেই। বিধানসভা নির্বাচনের সময়েও কেন্দ্রীয় বাহিনী, ৮ দফায় ভোট, অফিসার বদলি এই সব করেও তৃণমূলকে আটকানো যায়নি। তারা বিপুল ভাবে জিতেছে। তাই পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী এল নাকি হোম গার্ড দিয়ে ভোট কারনো হল এ সব কোনও বিষয় নয়। তৃণমূলই জিতবে।’’
অন্য দিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশন এই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। তাই আমার কাজ হবে, অবিলম্বে আজ রাত বা কাল সকালের মধ্যে আগে থেকেই সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট করা। যাতে পঞ্চায়েত ভোটে মৃত্যু মিছিলের কারিগর রাজ্য নির্বাচন কমিশন বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার একতরফা ভাবে শীর্ষ আদালতে না যেতে পারে। এই অর্ডার যে হেতু ‘স্পেসিফিক ম্যান্ডেটরি’, তাই আশা করব এই নির্দেশ আপলোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিশন কেন্দ্রকে লিখবে এবং স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে বাহিনী চেয়ে পাঠাবে।’’ কমিশনের তরফে এর কয়েক ঘণ্টা পরেই জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা হাই কোর্টের নির্দেশই কার্যকর করবে।