মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন বিদেশ সফরে থাকছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেপ্টেম্বরের ১২ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত ওই সফরে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন স্পেন এবং দুবাই। এর মধ্যে স্পেনের বার্সেলোনা শহরে মুখ্যমন্ত্রীর একটি কর্মসূচিতে থাকছেন সৌরভ। ওই একই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার কথা ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীরও। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে সৌরভের থাকার বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, ক্রিকেট এবং ফুটবল মাঠের দুই তারকাই মুখ্যমন্ত্রীর সফরে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন। সৌরভ আপাতত লন্ডনে রয়েছেন। সেখান থেকেই তাঁর আসার কথা বার্সেলোনায়। সুনীল রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। সদ্য বাবা হয়েছেন তিনি। স্ত্রী সোনম এবং সন্তান ঠিকঠাক থাকলে তিনি বেঙ্গালুরু থেকেই বার্সেলোনা যাবেন।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে লগ্নি আনার লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বিদেশ সফর। স্পেনে মমতা যাবেন রাজধানী শহর মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায়। যে দুই শহরের সঙ্গে ফুটবলপ্রেমী বাঙালির আত্মিক যোগ রয়েছে। ইদানীং ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের বড় ম্যাচের মতো বার্সেলোনা-রিয়েল মাদ্রিদ ‘এল ক্লাসিকো’ হলেও বাঙালি উদ্বেল হয়। ফলে মমতার এই সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ফুটবল ও খেলার সঙ্গে জড়িত অনেকেই। সে দিক থেকে সৌরভ ও সুনীলকে নিয়ে যাওয়ার ভাবনাও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি থাকালীন সৌরভের রাজনৈতিক যোগাযোগ নানা জল্পনা ছিল। তাঁ সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ নিয়েও কম আলোচনা হয়নি। সৌরভ নিজে অবশ্য বরাবরই প্রকাশ্যে সক্রিয় রাজনীতি এড়িয়ে গিয়েছেন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যেমন ভাল থেকেছে, তেমনই মমতার সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক বরাবরই মসৃণ থেকেছে। সৌরভকে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ‘সরানো’ নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। মমতা ওই পদক্ষেপকে ‘বাংলা ও বাঙালির অপমান’ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। বিদেশের মাটিতে এবং রাজ্যের স্বার্থে সৌরভকে মমতার সঙ্গে দেখা গেলে তা ‘রাজনৈতিক বার্তা’ দেবে বলেও অনেকে মনে করছেন। তবে সৌরভ-সুনীল একই কর্মসূচিতে থাকলে তা খেলা সংক্রান্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্পেনে প্রথমে মাদ্রিদে যাচ্ছেন মমতা। সেখান থেকে বার্সেলোনা। বার্সেলোনা থেকেতিনি দুবাই যাবেন। তার পর ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা। রাজ্যের শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধি দলও যাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। যাবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব-সহ কয়েক জন বরিষ্ঠ আমলা। এর আগেও লগ্নি টানতে সিঙ্গাপুর এবং লন্ডনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এ বারের সফরের অনুমতি নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। মাঝে মমতার চিন এবং শিকাগো সফরের অনুমতি দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিদেশ মন্ত্রক। যাকে কেন্দ্রের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসাবে অভিহিত করেছিল তৃণমূল। এই বিদেশ সফরের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে সদ্য। তার পরেই প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া এবং প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার।