Congress BJP Scuffle

জোড়া বিতর্কের জের, সংঘর্ষ কংগ্রেস-বিজেপির

শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং তাঁর পদত্যাগের দাবিতে এআইসিসি-র নির্দেশে এ দিন রাজ্য জুড়ে পথে নেমেছিল কংগ্রেস।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৮
সংঘর্ষে আহত পুলিশ।

সংঘর্ষে আহত পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

বি আর অম্বেডকরকে নিয়ে অমিত শাহের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য এবং সংসদে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদদের ‘হেনস্থা’, কুৎসার অভিযোগকে সামনে রেখে জোড়া প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার গোলমাল বাধল শহরে। প্রদেশ কংগ্রেসের দফতর বিধান ভবনের কাছে সংঘর্ষ বাধল কংগ্রেস ও বিজেপি যুব মোচার্র কর্মী-সমর্থকদের। গোলমালে জখম হয়েছেন এক জন পুলিশ আধিকারিকও। শাহের মন্তব্য এবং দলের দফতরে বিজেপির ‘হামলা’র প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার ফের রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে এ দিন কলকাতা ক্রিসমাস উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, “বাবাসাহেব অম্বেডকরকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা শুনে আমি স্তম্ভিত!” আগেই মমতা ওই মন্তব্যকে ‘দলিত বিরোধী’ বলেছিলেন।

শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং তাঁর পদত্যাগের দাবিতে এআইসিসি-র নির্দেশে এ দিন রাজ্য জুড়ে পথে নেমেছিল কংগ্রেস। সন্ধ্যায় এন্টালিতে মিছিলে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ প্রসাদের নেতৃত্বে যদুবাবুর বাজার মোড়েও বিক্ষোভ হয়েছে। তবে রাহুলের হাতে বিজেপি সাংসদদের হেনস্থা এবং অম্বেডকরের নাম জড়িয়ে দলের নামে কুৎসার অভিযোগে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার ডাকে দুপুরে বিধান ভবনে বিক্ষোভ-কর্মসূচিকে ঘিরে অশান্তি বাধে। মৌলালি থেকে মিছিল করে বিধান ভবনের সামনে পৌঁছন মোর্চার নেতা-কর্মীরা। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের হাতাহাতি বাধে। ইট ও বোতল-বৃষ্টিতে তেতে ওঠে এলাকা। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে। কর্মীদের সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় কংগ্রেস নেতা সুমন পাল, সুমন রায়চৌধুরী, মানস সরকার, অর্ঘ্য গণ, আজ়হার মল্লিক, সৌরভ ঘ‌োষ-সহ অন্য নেতাদের।

এই ঘটনাকে সামনে রেখে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্করের অভিযোগ, “গুন্ডাবাহিনী এনে বিধান ভবন দখলের দিবাস্বপ্ন দেখেছিল বঙ্গ-বিজেপি। আদানি-কাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি প্রথমে অম্বেডকরকে অপমান করেছে, তার পরে বিপাকে পড়ে এখন নানা জায়গায় হামলা করে নজর ঘোরাতে চাইছে।’’ পাল্টা কংগ্রেসের দিকেই হামলা এবং রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়। বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষেরও বক্তব্য, “তৃণমূল ও কংগ্রেস, উভয়েই গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলা চালায়। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের প্রতিফলন! আমরা আবার ওই একই রাস্তায় মিছিল করব।” কংগ্রেসের তরফে এন্টালি থানায় এফআইআর হয়েছে তমোঘ্নদের নামে। যদিও তমোঘ্নের দাবি, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না।

শাহের মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-ও। সিপিএমের পলিটব্যুরোও ভারতের সংবিধান প্রণেতা সম্পর্কে শাহের মন্তব্যকে ‘মনুবাদী চিন্তা-ভাবনার প্রকাশ’ বলে ধিক্কার জানিয়েছে। পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আড়াল করতে যা বলেছেন, সেটা যুক্তিযুক্ত নয়। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব থাকার কোনও অধিকার নেই শাহের’।

Advertisement
আরও পড়ুন