গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এ বার পথে নামছেন রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও পা মেলাবেন রবিবারের মৌনী মিছিলে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখে কোনও স্লোগান না থাকলেও, তাঁদের গলায় ঝোলানো থাকবে প্ল্যাকার্ড। সেই প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকবে, ‘আরজি ঘটনার দ্রুত বিচার চাই’, ‘সমাজবন্ধু পুলিশবাহিনী গড়ে তুলুন’।
উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার শিবপুরের কাজিপাড়া থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মিছিল হবে পুলিশকর্মীদের। তাঁদের মূল দাবি, আরজি কর-কাণ্ডে দ্রুত বিচার। হাওড়া (শহর)-র পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠীকে ইমেল করে রবিবারের কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। যদিও শনিবার রাত পর্যন্ত সেই ইমেলের কোনও জবাব আসেনি বলেই দাবি তাঁদের। উদ্যোক্তা নয়ন কুন্ডু জানিয়েছেন, পুলিশ শনিবার রাত পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানায়নি। তাই ধরে নেওয়াই যায় রবিবারে কর্মসূচিতে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
মৌনী মিছিলে আইনজীবী, চিকিৎসক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে কয়েক জনকে আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে কারা কারা রবিবারের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সমাজের প্রায় প্রতি স্তরের মানুষ পথে নেমেছেন। হাতে তুলে নিয়েছেন প্ল্যাকার্ড। হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল পথ। সরব হয়েছেন বিচারের দাবিতে। প্রতিবাদে রাস্তায় রাত জেগেছেন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী বা তাঁদের পরিবারকে অতীতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। তবে এই প্রথম অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা পথে নামছেন।
আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ চলছে। দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের আঁচ। আরজি করের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টে পুলিশকে ‘কাঠগড়ায়’ তুলেছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কলকাতা কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে পথে নেমেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। টানা কয়েক দিন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না-অবস্থান করেন তাঁরা। লাগাতার আন্দোলনের জেরে এক প্রকার বাধ্য হয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে বিনীতকে পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর-কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিজিতের গ্রেফতারির পর থেকেই পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দেয়। সেই ক্ষোভ প্রশমিত করতে কলকাতা পুলিশের অন্দরে বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে ১৪টি প্রস্তাবও নেওয়া হয়েছিল। সেই আবহেই প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিলেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা।