Recruitment Scam

অয়নের অফিসে মিলল পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও! আরও বহু দুর্নীতিতে আছে শান্তনু-যোগ: ইডি সূত্র

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু এখন ইডি হেফাজতে রয়েছেন। তাঁরই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অয়নের সল্টলেকের অফিসে শনিবার রাত থেকেই তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৫:০৬
Recruitment Scam: ED sources claimed some documents regarding recruitment in various municipalities are found in Santanu’s ally Ayan’s office

অয়নের সল্টলেকের অফিস থেকে মিলল পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও, খবর ইডি সূত্রে। ছবি: সংগৃহীত।

রাতভর তল্লাশি অভিযানে একের পর এক ‘বিস্ফোরক’ নথি মিলছে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ প্রোমোটার অয়ন শীলের অফিস থেকে। ইডি সূত্রে খবর, এ বার অয়নের সল্টলেকের অফিস থেকে মিলেছে রাজ্যের একাধিক পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি! অয়নের অফিসে থাকা কয়েকটি কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, রাজ্যের একাধিক পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি রয়েছে কম্পিউটারে। কিছু ফোল্ডারে রয়েছে চাকরিপ্রার্থী এবং প্রাপকদের নামও। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ সংক্রান্ত হাতে লেখা কিছু ‘নোট’ও পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তবে ইডি সূত্রে খবর, রবিবার সকাল থেকে যে সমস্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, শুধু নিয়োগ দুর্নীতি নয়, একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শান্তনু এবং তাঁর সহযোগীরা। তবে বিস্তারিত তদন্তের পরেই চিত্রটি স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু এখন ইডি হেফাজতে রয়েছেন। তাঁরই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অয়নের সল্টলেকের অফিসে শনিবার রাত থেকেই তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। রবিবার সকালে ইডির তরফে জানানো হয়, তল্লাশিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা সম্বলিত কয়েকটি তালিকাও ছিল বলে জানা যায়। ছিল সম্পত্তি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথিও। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কোনও সরকারি কর্তাব্যক্তি না হয়েও এক জন প্রোমোটারের অফিসে এই নথি এল কী ভাবে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

পরে ইডি সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন বছরের একাধিক চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিটের প্রতিলিপি মিলেছে অয়নের অফিসে। অফিসের আলমারি, এমনকি জামাকাপড় রাখার জায়গা থেকেও একাধিক ডিজিটাল নথি মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন, এই ঘটনা থেকে তা প্রমাণিত হচ্ছে বলে দাবি করেছে ওই ইডি সূত্রটি। সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখেও শান্তনুর সঙ্গে যৌথ ভাবে কেনা বেশ কিছু সম্পত্তি মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।

শনিবারই বলাগড়ের একটি রিসর্টে শান্তনু-ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে জেরা করেন ইডির আধিকারিকরা। একই সঙ্গে ইডির একটি দল পৌঁছে যায় অয়নের বাড়িতেও। সূত্রের খবর, অয়ন শান্তনু-ঘনিষ্ঠ। জগুদাস পাড়ায় অয়নের তৈরি করা একটি আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে শান্তনুর। প্রোমোটার অয়নকে জেরার পাশাপাশি তাঁর মা-বাবাকেও জেরা করে ইডি। বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। অয়নের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইডি আধিকারিকদের হাতে বেশ কিছু ফাইল দেখা যায়। অয়নের পরিবার সূত্রে জানা যায়, একাধিক কাগজে অয়নের বাবা সদানন্দ শীলকে দিয়ে সই করিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা।

সদানন্দ জানান, তাঁর বাড়িতে ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি চালিয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর ছেলে (অয়ন) যুক্ত কি না, তা ইডি জানতে চায় অয়নের বাবার কাছে। সদানন্দ দাবি করেন, ছেলে কোনও দুর্নীতিতে জড়িত কি না, তা জানা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তবে তিনি ইডিকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, সল্টলেকের এফডি ব্লকের এই অফিসটি ভাড়া নিয়েছিলেন অয়ন। বছর তিনেক আগে সল্টলেকের বাড়িটি ভাড়া নেন অয়ন। বাড়িটির মালিক শৈবাল চক্রবর্তীর দাবি, অয়ন যখন বছর তিনেক আগে বাড়িটি ভাড়া নেন, তখন সিনেমার প্রোডাকশন হাউসের কাজ করেন বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement