Dilip Ghosh

দিলীপের বাড়ি ঘেরাও করতে বলেন অভিষেক, তাঁর কনভয়েই হামলা! কী বলছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি?

শুক্রবারের অঘটনের পরে সেই প্রসঙ্গই টেনেছেন দিলীপ। প্রসঙ্গত, কিছু দিন ধরেই কুড়মি সমাজের একটি অংশের সঙ্গে দিলীপের বিবাদ শুরু হয়। সেই সময়ে দিলীপ কুড়মিদের সম্পর্কে কটু কথাও বলেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ২১:২৬
Reaction of BJP leader Dilip Ghosh on attack on convoy of TMC leader Abhishek Banerjee

এই ধরনের হিংসার রাজনীতি পছন্দ করেন না বলেই জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বাড়ি বৃহস্পতিবারই ঘেরাও করলে যাবতীয় সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাঁর কনভয়ে হামলা চালালেন কুড়মিরা। এই ঘটনার পরে সরব বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের হিংসার রাজনীতি আমরা পছন্দ করি না। আমি ব্যক্তিগত ভাবেও চাই না। কিন্তু বৃহস্পতিবারই তো অভিষেক আমার বাড়ি ঘেরাওয়ে মদত দেবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। আজ তিনি নিজে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, উস্কানি দিলে কী পরিণতি হতে পারে।’’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে পুরুলিয়ায় শিমুলিয়ায় বক্তৃতা করেন অভিষেক। সেখানেই তিনি কুড়মিদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে সরব হন। কুড়মিদের হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তাও দেন। অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আপনারা আন্দোলন করুন। প্রয়োজন হলে যান দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাও করুন। শপথ নিন যে, একটাও বিজেপি নেতাকে পুরুলিয়ায় প্রবেশ করতে দেব না। যা যা সমর্থন লাগবে আমি দেব। যেখানে বলবেন, সেই লড়াইয়ে কাঁধ মেলাতে যাব। সমর্থন মানে, গায়ে গতরে খাটব।’’ শুক্রবারের অঘটনের পরে সেই প্রসঙ্গই টেনেছেন দিলীপ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কিছু দিন ধরেই কুড়মি সমাজের একটি অংশের সঙ্গে দিলীপের বিবাদ শুরু হয়েছিল। সেই সময়ে দিলীপ কুড়মিদের সম্পর্কে কটু কথাও বলেছিলেন। এর পরে তাঁরা দিলীপের খড়্গপুরের বাসভবন ঘেরাওয়ের ডাক দেন। সেই কর্মসূচি হয়ও।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ মে। সে দিন ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় থানার বামাল গ্রামে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কুড়মিদের জন্য কী করেছেন? পাল্টা দিলীপও দাবি করেন, খেমাশুলিতে আন্দোলনের তিনি কুড়মি নেতাদের নানা ভাবে সাহায্য করেছিলেন। দিলীপের এই মন্তব্যেরও বিরোধিতা করে কুড়মি সমাজ। তার প্রেক্ষিতে সোমবার দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘ওরা বেশি বাড়াবাড়ি করলে সব ক’টা নেতার কাপড় খুলে দেব। দিলীপ ঘোষের পিছনে যেন লাগতে না আসে।’’ এতেই কুড়মিদের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে। রানিবাঁধে দিলীপের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। কুড়মিরা হুঁশিয়ারি দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চেয়ে দিলীপ যদি নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার না করেন, তা হলে ৫০ হাজার কুড়মিকে নিয়ে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করা হবে। সেই মতো গত ১৮ মে দিলীপের বাড়ির সামনে জমায়েত করেন কুড়মিরা। দরজা ভেঙে ঢুকে পড়েন অনেকে। গাছপালা ভাঙচুর করা হয়।

শুক্রবার সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে যখন হামলা চলল, তখন তৃণমূল নেতারা উস্কানি দিয়েছিলেন। কলকাতায় বসে অনেকে হাততালি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করেননি। আজ তাঁরা কী বলবেন? আমিও সাংসদ, অভিষেকও সাংসদ। এই রাজ্যে সাংসদদের নিরাপত্তা নিয়েই তো প্রশ্ন উঠল।’’ একই সঙ্গে দিলীপ রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি জঙ্গলমহলের ছেলে। আমি জানি তাঁদের অভাব অভিযোগ। ৫০ বছর ধরে বঞ্চনা হয়েছে। সে সব কথা কলকাতা শহরে বড় হওয়া রাজপুত্ররা জানেন না।’’

বৃহস্পতিবার অবশ্য বিজেপিকেই আক্রমণ করেছিলেন অভিষেক। বলেছিলেন, “আমাদের সরকার ২০১৭ সালে ক্যাবিনেটে রেজোলিউশন করে পাঠিয়েছিল। কোনও রাজ্য সরকার করেছে? কেউ করেনি। সেখানে পুরুলিয়ায় কুড়মি ভাইদের একাংশ মিথ্যা প্ররোচনায় পা দিয়ে এদেরকে ভোট দিয়েছিল। আর এদের দলের নেতারাই এসে বলছেন কুড়মি ভাইদের জামাকাপড় খুলে দেব।” এর পরেই তিনি দিলীপের বাড়ি ঘেরাওয়ের কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement