Ration Distribution Case

রেশন দুর্নীতি: কৌশলে সব ক্ষেত্রেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় নিজেকে আড়াল করেছেন, দাবি ইডির

ইডির দাবি অনুযায়ী, বাকিবুরের বয়ান ও তাঁর মোবাইলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাটের সূত্রেই রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয়র নাম উঠে আসে। পাশাপাশি মন্ত্রীর দুই আপ্তসহায়কের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৩৬
Jyotipriya Mallick

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে কৌশলে সব ক্ষেত্রেই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু নিজেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

তাঁদের যুক্তি, রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য তিনটি সংস্থা খোলা হলেও কোনওটাতেই নিজে ডিরেক্টর ছিলেন না মন্ত্রী। যশোহর রোডের ভগবতী কলোনির একটি ফ্ল্যাটে ছিল ওই সংস্থার অফিস। ইডির দাবি, ওই ফ্ল্যাটের মালিকানায় নাম রয়েছে মন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক অমিত দে-র।

তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, ওই তিনটি সংস্থার ডিরেক্টর পদে নাম পাওয়া গিয়েছে মন্ত্রীর স্ত্রী ও কন্যার। ওই সংস্থাগুলির পরিচালন বোর্ডে রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমান এবং মন্ত্রীর এক সহায়ক অভিজিৎ দাসের পরিবারের সদস্যদেরও নাম থাকলেও কোথাও মন্ত্রী নেই বলে দাবি তদন্তকারীদের। আদালতে জমা দেওয়া ইডির নথি অনুযায়ী, ওই সংস্থাগুলির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা হওয়ার পরে মন্ত্রীর স্ত্রী ও কন্যা পদত্যাগ করেন। ইডির দাবি, কালো টাকার একটি বড় অংশ বাকিবুরের মালিকানাধীন ‘এনপিজি গ্রুপ অব কোম্পানি’-র নামে থাকা হোটেল পানশালায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। ইডি কর্তাদের কথায়, ‘‘সেখানেও কোথাও কাগজে-কলমে মন্ত্রীর নাম নেই।’’

ইডির দাবি অনুযায়ী, বাকিবুরের বয়ান ও তাঁর মোবাইলের হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাটের সূত্রেই রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয়ের নাম উঠে আসে। পাশাপাশি মন্ত্রীর দুই আপ্তসহায়কের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। আদালতে জমা দেওয়া নথিতে ইডির আরও দাবি, বাকিবুরের হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাটে ‘এমআইসি’ অর্থাৎ ‘মিনিস্টার ইন চার্জ’ জ্যোতিপ্রিয়কে একাধিক বার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, অভিজিতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া মেরুন ডায়েরিতে জ্যোতিপ্রিয়কে কত টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা নথিভুক্ত রয়েছে।

রবিবার জ্যোতিপ্রিয়ের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে কিছু নথি জমা দিতে আসেন। কিন্তু কোনও অফিসার না থাকায় তিনি ফিরে যান। সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি প্রিয়দর্শিনী।

এ দিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। গত ২৭ অক্টোবর তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারে ভর্তি করা হয়েছিল। রবিবার রাতে জ্যোতিপ্রিয়কে সেখান থেকে প্রাইভেট কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ দিন দুপুরে তাঁর হল্টার মনিটর শেষ হয়েছে। অন্য দিকে এ দিন ফের মন্ত্রীর মস্তিষ্ক এবং ঘাড়ের কাছের মেরুদণ্ডের এমআরআই করা হয়েছে। আজ, তাঁর ‘হেড আপ টিল্ট টেস্ট’ করা হতে পারে। বাইপাসের ধারের ওই বেসরকারি হাসপাতালের দেওয়া মেডিক্যাল বুলেটিনে রবিবার জানানো হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের শরীরের বাঁ দিকের হাত ও পায়ের মাংসপেশিতে মৃদু দুর্বলতা রয়েছে। তাঁকে ডায়াবেটিক সাধারণ খাবার দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement