Monsoon in West Bengal

কয়েকটি জেলায় সোমবার পর্যন্ত সইতে হবে অস্বস্তির গরম, তাপপ্রবাহ না থাকার পূর্বাভাস মঙ্গল থেকে

দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় রবি এবং সোমবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩ ১৭:৩৭
image of summer

স্বস্তি-স্নান। — ফাইল চিত্র।

তীব্র দাবদাহের পর দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় খানিক স্বস্তি মিলেছিল শনিবারই। রবিবার সেই স্বস্তির ধারা বজায় থাকল। বাড়তি পাওনা বৃষ্টির পূর্বাভাস। রবিবার বিকেলের দিকে কলকাতা এবং পার্শ্ববতী অঞ্চল-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বজ্রপাত-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। সেই সম্ভাবনা রয়েছে সোমবারও। যদিও পুরুলিয়া, বীরভূম-সহ পশ্চিমের জেলাগুলির দু-এক জায়গায় রবিবার এবং সোমবার তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা স্থায়ী হবে না। কারণ আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের কথা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উত্তরে বর্ষা আগেই প্রবেশ করেছে। প্রায় প্রতি দিনই হচ্ছে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। রবি থেকে মঙ্গলবার তিন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। বাকি পাঁচ জেলাতেই কম-বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আগামী দু’দিন অর্থাৎ রবি এবং সোমবার বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় এই দু’দিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ২০ তারিখ, অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে এই বৃষ্টি আর একটু বাড়তে পারে। কারণ হাওয়া অফিস মনে করছে, আগামী দু-তিন দিনে খাতায়কলমে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে আগামী চার-পাঁচ দিনে দক্ষিণে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। দীর্ঘ দহনের পর স্বস্তির পেতে পারেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

তবে পশ্চিমের কিছু জেলায় স্বস্তি আসতে আরও দু-এক দিন দেরি। রবি এবং সোমবার পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে ওই জেলাগুলির দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। রবিবার বিকেলের দিকে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। কলকাতায় ২০ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

খাতায়কলমে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছে আগেই। সেখানে মৌসুমী অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে। তার জেরে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। জেলার দু-এক জায়গায় সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। সেখানে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পঙেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চল-সহ উত্তরের পাঁচ জেলায় বর্ষা আগেই প্রবেশ করলেও দুই দিনাজপুর, মালদহে তাপপ্রবাহ চলেছে গত সপ্তাহে। এই সপ্তাহের শুরুতেও তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস ছিল সেখানে। এ বার এই তিন জেলাতেই স্বস্তির বার্তা। রবি থেকে মঙ্গলবার ওই তিন জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে।

চলতি বছর উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই গরমে হাঁসফাঁস হয়েছেন বাসিন্দারা। সমতলের পাশাপাশি পাহাড়েও দিনের তাপমাত্রা নজির গড়েছে। দার্জিলিং কালিম্পঙে ফ্যান কেনার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। বাকি সমতলে এসি বিক্রি হয়েছে দেদার বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। দক্ষিণে গরম ছিল আরও প্রবল। গত সপ্তাহ জুড়েই দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ছড়ি ঘুরিয়েছে গরম। পশ্চিমের বাঁকুড়া, বীরভূম, নদিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়ায় তাপপ্রবাহ চলেছে। তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। অনেক সময় ৪০-এর গণ্ডিও ছাড়িয়ে গিয়েছে তাপমাত্রা। যদিও মনে হয়েছে, তাপমাত্রা যেন ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছে। যে সব জেলায় তাপপ্রবাহ হয়নি, সেখানে ভুগিয়েছে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। প্যাচপ্যাচে গরমে নাজেহাল হয়েছেন বাসিন্দারা। কলকাতাতেও ছিল একই অবস্থা। দিনের বেলায় রাস্তায় বেরিয়ে অসুস্থ হয়েছেন বহু মানুষ। শনিবার থেকে কলকাতা-সহ আশপাশের জেলায় কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে। তবে পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় গরমের দাপট এতটুকু কমেনি। বরং অস্বস্তি বেড়েছে। তার পর রবিবারও সকাল থেকে কলকাতা এবং আশপাশের অঞ্চলের আকাশ ছিল মেঘলা। হাওয়ার অফিস জানিয়েছে বিকেলের বৃষ্টি আরও একটু স্বস্তি বাড়াতে পারে সাধারণ মানুষের। আর দু-তিন দিনে বর্ষার কারণে বদলাতে পারে ছবিটা।

আরও পড়ুন
Advertisement