— প্রতীকী চিত্র।
আনাজ এবং মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্তের মাথায় হাত। আর বেআইনি অস্ত্রের দাম বৃদ্ধির জেরে হাতে ছেঁকা লাগার উপক্রম দুষ্কৃতীদের!
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন বেআইনি অস্ত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০ থেকে ৪০ শতাংশ। যে ‘মুঙ্গের মেড’ নাইন এমএম পিস্তল বিক্রি হচ্ছিল ৩৫ থেকে ৪০ হাজারে, সেই অস্ত্র এখন বিক্রি হচ্ছে কোথাও ৬০ হাজারে, কোথাও বা ৭০ হাজারে। আবার মুঙ্গেরের সেভেন এমএম পিস্তলের দাম বেড়ে হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার। আগে ওই দেশি অস্ত্র বিক্রি হচ্ছিল কুড়ি থেকে ২৫ হাজারে। এ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের কাছে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে দেশি ওয়ান শটারের। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ হাজারে। আগে মিলত পাঁচ থেকে সাত হাজারে।
কেন হঠাৎ দাম বাড়ল অস্ত্রের?
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। যেমন, রাজ্য পুলিশের এসটিএফ আসানসোলের কুলটি থেকে ১০টি ওয়ান শটার বাজেয়াপ্ত করে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তার আগে এসটিএফ বিধাননগর থেকে সেভেন এমএম পিস্তল-সহ মুঙ্গেরের দুই ভাইকে গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে তদন্তকারীর জেনেছেন, বিহারে অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হলে সহজে জামিন মিলছে না। তার জেরে বেআইনি অস্ত্র তৈরিতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। আর এতেই জোগানের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সূত্রের খবর, এ রাজ্য এবং বাংলাদেশে বেআইনি ‘মুঙ্গের মেড’ অস্ত্রের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অস্ত্রের কারবারিরা। এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, এর সঙ্গেই দাম বেড়েছে গুলির। বর্তমানে এক রাউন্ড কার্তুজ পাঁচশো টাকা করে বিক্রি করছেন অস্ত্রের কারবারিরা। যা বিভিন্ন লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান থেকে চোরা পথে পৌঁছে যাচ্ছে দুষ্কৃতীদের হাতে।
গোয়েন্দাদের দাবি, রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট গত এক সপ্তাহে গোটা রাজ্যে বেআইনি অস্ত্রের বিরুদ্ধে তল্লাশি চালিয়ে ১০০-রও বেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। যার অধিকাংশই বিহারের মুঙ্গের থেকে এসেছে। এর আগে কলকাতা পুলিশ মুঙ্গেরের অস্ত্র কারখানায় হানা দিয়েছিল। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ধরপাকড় কিংবা অস্ত্রের দাম বৃদ্ধি ঘটলেও বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে অস্ত্র ঢোকার বিরাম নেই। পুলিশের চোখ এড়িয়ে বিহার ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ট্রেনের অসংরক্ষিত কামরায় এবং লোকাল বাসে ওই অস্ত্র কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পৌছে যাচ্ছে।