RG Kar Medical College And Hospital Incident

সরকারের সঙ্গে চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও রিষড়ার সংস্থা থেকে কেন বিপুল ওষুধ আরজি করে, উঠছে প্রশ্ন

কেন তা করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘তেমন কিছু হয়ে থাকলে নিশ্চয় খতিয়ে দেখা হবে।’’

Advertisement
পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৫:৪৪
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

সরকারের বাছাই করা ওষুধবিক্রেতার বদলে গত আর্থিক বর্ষে (২০২৩-২৪) আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে বক্ষ বিভাগের (চেস্ট মেডিসিন) জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার শ্বাসকষ্টের ওষুধ, ইনহেলার কেনা হয়েছে ‘লোকাল পারচেজ়’ এর মাধ্যমে, হুগলির রিষড়ার একটি সংস্থার থেকে। অথচ এটি সরকারি দরপত্রের মাধ্যমে অনুমোদিত সংস্থা নয়, সরকারের সঙ্গে এই সংস্থার চুক্তিও ছিল না।

Advertisement

আর জি কর কাণ্ডের সঙ্গে আর্থিক দুর্নীতি, নিম্ন মানের ওষুধ কেনার যোগ থাকতে পারে বলে অভিযোগ উঠছে। আর নিহত চিকিৎসক কাজ করতেন বক্ষ বিভাগেই। ওষুধের মান নিয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান বলেও একাধিক সিনিয়র চিকিৎসক দাবি করেছেন। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ, সরকারি ওষুধের তালিকায় (ক্যাট আইটেম) শ্বাসকষ্টের অন্য ওষুধ এবং ইনহেলার থাকলেও সেগুলি নামমাত্র কিনে আর জি কর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ‘এ এস মেডিক্যাল এজেন্সি’ নামে রিষড়ার ওই সংস্থার থেকে বিপুল পরিমাণ শ্বাসকষ্টের ওষুধ, ইনহেলার ‘লোকাল পারচেজ়’ করেছে। অথচ, সেই সময়ে সরকারি ওষুধের দোকানে ওই ওষুধের ঘাটতি ছিল না বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন তা করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘তেমন কিছু হয়ে থাকলে নিশ্চয় খতিয়ে দেখা হবে।’’ ওই সংস্থা ‘এ এস মেডিক্যাল এজেন্সি’-র প্রধান অনুপ কুমার মণ্ডল ওরফে বাবলু, ‘‘এ বিষয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করব না’’ বলে ফোন কেটে দেন।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে দরপত্রের মাধ্যমে সরকারি ভাবে বাছাই করা ওষুধ সংস্থার থেকে এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ ৪৯ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬৭২ টাকার ইনহেলার, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ৪৩ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩৬০ টাকার ইনহেলার, নীলরতন ২৮ লক্ষ ৭৩ হাজার এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার ইনহেলার কিনেছিল। কিন্তু আর জি কর কিনেছিল ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৮৮ টাকার ইনহেলার। অথচ, ওই সময়সীমায় তারা রিষড়ার ওষুধ সংস্থার থেকে ‘লোকাল পারচেজ়’ করেছিল ৬০ লক্ষ টাকার শ্বাসকষ্টের ওষুধ ও ইনহেলার। এর মধ্যে শুধু ইনহেলার ছিল ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকার (প্রায় ৭৪ হাজার)। দেখা গিয়েছে, ওই সময়সীমায় আর জি কর মোট ২ কোটি ৪ লক্ষ টাকার সরকারি তালিকা-বহির্ভূত ওষুধ কিনেছে। এবং এর পুরোটাই কেনা হয়েছিল রিষড়ার ওই সংস্থার থেকে।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম-এর সদস্য, চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণের অভিযোগ, ‘‘সন্দীপ ঘোষ অধ্যক্ষ থাকাকালীন কাটমানি খেয়ে নিম্ন মানের ওষুধ হাসপাতালে ঢুকিয়েছেন, তা সকলেই জানেন। স্বাস্থ্য দফতর কেন তদন্ত করছে না?’’ দফতরের ওষুধপত্র কেনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘কোনওনির্দেশ আসেনি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement