বন্ধ সিউড়ি-কোমা রাস্তা। ল’বাগান এলাকায় চন্দ্রভাগা নদীর জল বইছে ভাসাপুলের উপর দিয়ে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র Tapas Banerjee
এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিউড়ি ২ ব্লক। ব্লকের অন্তর্গত দমদম, কোমা, বনশঙ্কা এই তিনটি পঞ্চায়েত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমা ও বনশঙ্কা গ্রামে প্রায় ৭০-৮০টি মাটির বাড়ির ভিতর জল ঢুকে গিয়েছে। বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ঠাঁই নিচ্ছেন। দমদমা পঞ্চায়েতের ধলটিকুরি গ্রামে রাতভর টানা বৃষ্টিতে মাটির গোয়াল ঘর ভেঙে চাপা পড়েছে ১২টি গরু। এর মধ্যে ১১টি গরু মারা গিয়েছে, বেঁচে থাকা গরুটিরও অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ পান, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান বিডিও (সিউড়ি ২) ঋষিতা দাস।
বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা সিউড়ি ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলাম ও বিডিও শুক্রবার দিনভর পুরো ব্লকের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। বেশ কিছু মাটির বাড়ির ছাদ চুঁইয়ে জল পড়া আটকাতে ইতিমধ্যেই বিডিও কার্যালয় থেকে ত্রিপল বিলি করাও শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই কোমা পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামে বাড়ির ভিতর বৃষ্টির জল ঢুকে পড়তে শুরু করে। আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে তুলনামূলক উঁচু জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেন। বেশ কিছু মাটির বাড়ির ছাদ চুঁইয়েও জল পড়তে থাকে।
সকাল থেকেই স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি এলাকায় ঘুরে পরিস্থিতির কথা জানান সিউড়ি ২ ব্লকের বিডিওকে। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত ত্রিপলের ব্যবস্থা করেন। বলরাম জানান, কোমা হাই স্কুল এবং স্থানীয় দু’টি প্রাথমিক স্কুলের চাবি নিয়ে রাখা হয়েছে। যদি জল আরও বাড়ে এবং বাড়ির ভিতরে থাকা কঠিন হয় তা হলে ক্ষতিগ্রস্তদের সাময়িক ভাবে স্কুলগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এ দিন কোমা অঞ্চলে তৃণমূলের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু খাদ্যদ্রব্যও বিলি করা হয়।
অন্য দিকে, এ দিন বিকালে প্রায় একই পরিস্থিতি তৈরি হয় বনশঙ্কা পঞ্চায়েত এলাকাতেও। খবর পেয়েই পরিস্থিতির খতিও দেখতে সেখানে ছুটে যান বিডিও এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। সেখানেও যে বাড়িগুলিতে জল ঢুকেছে, সেগুলির বাসিন্দাদের সাময়িক ভাবে গ্রামেরই তুলনামূলক নিরাপদ বাড়িগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ দিন সকালে ধলটিকুরি গ্রামে গোয়াল ঘরে চাপা পড়ে মারা যাওয়া গরুগুলিকেও দেখতে যান বিডিও। সঙ্গে ছিলেন পশু চিকিৎসকও। বিডিও বলেন, “বৃষ্টিতে গবাদি পশুর মৃত্যু-সহ অন্য ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা আমরা জেলাশাসকের কাছে সবিস্তারে জানাচ্ছি। সরকারি ভাবে যা ক্ষতিপূরণ তাঁদের প্রাপ্য, তা যেন তাঁরা পান, সেই বিষয়টিকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের ব্লকের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিকও আলাদা করে গরু মৃত্যুর ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরে জানিয়েছেন।” নুরুল বলেন, “সরকারি স্তরে যা যা সাহায্য করা সম্ভব, সবই করা হচ্ছে।”