Ram Mandir Inauguration

রাম-রাম-রাম! রামপাড়ার সব পুরুষের নামই রাম, বাঁকুড়ার ‘রামময়’ গ্রাম সাজছে অযোধ্যার জন্য

রামকানাই, রামলাল, রামবল্লভ, রামময়, রামশঙ্কর, রামকালী, রামব্রহ্ম, রামদুলাল— এ ভাবেই চলছে নবজাতকদের নামকরণের প্রথা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৯
Ram Mandir

রামপাড়ার রামমন্দিরে ভোগ নিবেদন হবে আগামী ২২ জানুয়ারি। —নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের নাম পশ্চিম সানাবাঁধ। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া এই গ্রাম ‘রামময়’। কারণ, গ্রামের একটি পাড়ায় কুলদেবতা থেকে মানুষের নাম, সব কিছুই রামময়। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন ঘিরে বাঁকুড়ার সেই ‘রামভূম’-এ এখন সাজ সাজ রব।

Advertisement

শোনা যায়, আড়াইশো বছর আগে পশ্চিম সানাবাঁধ গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারের এক ব্যক্তি স্বপ্নাদেশ পান। তার পর থেকে শালগ্রাম শিলাকে রামজ্ঞানে পুজো শুরু করে মুখোপাধ্যায় পরিবার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই রামই হয়ে ওঠেন মুখোপাধ্যায় পরিবারের কুলদেবতা। বাড়ির অদূরে স্থাপিত হয় রামমন্দির। ধীরে ধীরে ওই এলাকাও ‘রামপাড়া’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। তার পর ঘটে আর এক কাণ্ড। মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সমস্ত ছেলের নামে ‘রাম’ যুক্ত করে দেওয়ার চল শুরু হয় প্রায় আড়াইশো বছর আগে। রামকানাই, রামলাল, রামবল্লভ, রামময়, রামশঙ্কর, রামকালী, রামব্রহ্ম, রামদুলাল— এ ভাবেই চলে নবজাতকদের নামকরণের প্রথা। বর্তমানে রামপাড়ার মুখোপাধ্যায় পরিবার ভেঙে বেশ কয়েকটি পরিবার হয়েছে। রুজিরুটির টানে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছেন পরিবারের অনেক সদস্য। কিন্তু পরিবারের পুরুষদের নামকরণের সেই ‘ধারা’ এখনও অটুট। মুখোপাধ্যায় পরিবারের অন্যতম সদস্য রামময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত আড়াইশো বছরে আমাদের পরিবারের যত শিশুসন্তান জন্মেছে, প্রত্যেকের নাম রাখা হয়েছে রাম দিয়ে। আমাদের পরিবারে শিশুসন্তানের জন্ম হলেই খবর দেওয়া হয় কুলগুরুকে। তিনিই মূলত রাম দিয়ে নামকরণ করে দেন। আজ পর্যন্ত আমাদের পরিবারের কোনও নাম যেমন দ্বিতীয় বার দেওয়া হয়নি, তেমনই রাম নাম বাদ দিয়ে কোনও পুরুষের নাম রাখা হয়নি।’’

রামের প্রতি এমন আবেগ যে পাড়ার, সেই পাড়ায় অযোধ্যার রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে আবেগ বা উচ্ছ্বাস থাকবে না, তা তো হয় না! আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিন মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করেছেন রামপাড়ার ‘রামসেবক’ মুখোপাধ্যায় পরিবার। ওই পরিবারের রামকানাই মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দেশে এত বড় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হবে, আর আমরা আনন্দ পাব না, তা তো হয় না। আমাদের কুলদেবতার এত বড় মন্দির হচ্ছে, এ তো আমাদের গর্বের দিন।’’ রামকানাই জানান, তিনি অতীতে একাধিক বার অযোধ্যায় গিয়েছেন। সময়-সুযোগ এলে আবার রামমন্দির দেখতে যাবেন। আর অযোধ্যায় রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন গ্রামের রামমন্দির বিশেষ ভাবে সাজানো হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি বিশেষ রামপুজো হচ্ছে রামপাড়ায়। সবার জন্য থাকছে ভোগের আয়োজন। এখন দম ফেলার ফুরসত নেই রামকানাই এবং রামময়দের।

আরও পড়ুন
Advertisement