ডিভিসির রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের সূচনায় পুজো অনুষ্ঠানে ডিভিসির চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।
দরপত্র আহ্বানের জটিলতা কাটিয়ে ডিভিসির রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরটিপিএস) দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ শুরু হল। বৃহস্পতিবার কাজের সূচনায় ‘ভূমিপুজো’ করেন ডিভিসির চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার। তাঁর দাবি, এই পর্যায়ে দেড় থেকে দু’হাজার জন ঠিকাশ্রমিক কাজ পাবেন। সেই নিয়োগে এলাকার জমিদাতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আর নির্মাণকাজে নিয়োগ করা হবে আরও কয়েক হাজার জনকে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে আরটিপিএসের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ডিভিসি দরপত্র আহ্বান করলে একটি মাত্র সংস্থা তাতে যোগ নেয়। পরে সেই দরপত্র বাতিল করা হয়। এতে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ঘিরে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এ দিন চেয়ারম্যান বলেন, “আগে দরপত্র আহ্বানের সময়ে একটিই সংস্থা বার বার যোগ দেওয়ায় কিছু সমস্যা হচ্ছিল। তা মিটেছে। আপাতত দ্বিতীয় পর্যায়ের আংশিক কাজ শুরু করা হচ্ছে। টারবাইন তৈরির বরাত পেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভেল।”
দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু নিয়ে বার বারই নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। ২০১০-এ তৎকালীন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের শিলান্যাস করেন। কিন্তু আরটিপিএসের প্রথম পর্যায় থেকে সময়মতো বাণিজ্যিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু না হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়কে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয় ডিভিসির অন্দরে। এ দিন চেয়ারম্যান বলেন, “প্রথমে আরটিপিএসের দ্বিতীয় পর্যায় অনুমোদন পেয়েছিল। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের নতুন করে অনুমোদন মিলেছে। ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।” প্রসঙ্গত, এই পর্যায়ের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে না ডিভিসিকে। প্রয়োজনীয় জমি সংস্থার হাতেই আছে।
দ্বিতীয় পর্যায় থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য ইতিমধ্যে রেলের পাশাপাশি গুজরাত, দিল্লি, কর্নাটক, কেরলের মতো রাজ্যের সঙ্গে ‘পাওয়ার পারচেজ় এগ্রিমেন্ট’ করেছে ডিভিসি। চেয়ারম্যান জানান, রঘুনাথপুরের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের কোডার্মাতেও ৮০০ মেগাওয়াটের নতুন ইউনিট তৈরি করছে ডিভিসি। এ ছাড়াও, দুর্গাপুরে তৈরি হচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াটের আর একটি ইউনিট। সব মিলিয়ে আগামী দিনে ১০,৪৪০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করবে ডিভিসি। দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হলে ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে উৎপাদনের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছবে আরটিপিএস।
রঘুনাথপুরের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে দু’টি ইউনিট থেকে পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন চালিয়ে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছিল ডিভিসি। মাঝে সাড়ে তিন মাসের মতো একটি ইউনিটে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। চেয়ারম্যান জানান, আরটিপিএসে ফের পূর্ণমাত্রায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। ওই ইউনিটটি বন্ধ থাকায় কিছু আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। মার্চ পর্যন্ত পূর্ণ মাত্রায় উৎপাদন চালিয়ে তা মেটানো হবে।