West Bengal BJP

‘ফাঁস’ বিজেপির অন্দরের কথা! রাজ্য সভাপতি সুকান্ত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সম্পর্কে ‘বেলাগাম’ বিধায়ক নীলাদ্রি

লোকসভা ভোটে নীলাদ্রিশেখর দানাকে প্রার্থী করলে ‘পাগলা ভোট’ হবে হবে বাঁকুড়ায়। ‘সুভাষ তোলাবাজ’! ‘সুকান্ত বাঁকুড়া চেনেন না।’ ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপের সৌজন্যে এমনই সব মন্তব্য শোনা গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৬

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং দুর্নীতির অভিযোগে আঙুল তুললেন বিজেপিরই বিধায়ক! বুধবার এ নিয়ে শোরগোল বাঁকুড়ার রাজনৈতিক মহলে। অভিযোগ, বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা কারও সঙ্গে ফোনালাপে বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষের বিরুদ্ধে কটু মন্তব্য করেছেন। সমালোচনা করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বেরও। বিজেপি বিধায়কের ‘ফোন কলের অডিয়ো রেকর্ড’ বলে সেটি ভাইরালও হয়ে গিয়েছে (যদিও অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।) তবে ওই অডিয়ো ক্লিপের প্রেক্ষিতে দলীয় বিধায়ককে উদ্দেশ্য করে পাল্টা উচ্ছৃঙ্খল বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা বিজেপির অন্দরে সাংসদ সুভাষকে নিয়ে আগেও ‘জলঘোলা’ হয়েছে। বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর পরই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। এমনকি, দলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে ‘বন্দি’ হয়েছিলেন সুভাষ। এ বার সুভাষের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন খোদ তাঁর দলেরই বিধায়ক। ফাঁস হওয়া অডিয়ো ক্লিপে সুভাষ সম্পর্কে এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের সাংসদ তথা মন্ত্রী চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে পর্যন্ত তোলা আদায় করেন। ভদ্রতার মুখোশের আড়ালে তিনি সর্বত্রই এমনটা করে চলেছেন।’’ যে অডিয়োর কণ্ঠস্বর নীলাদ্রির সঙ্গে মিলে যায়। ওই বক্তাকে আসন্ন লোকসভা ভোটে প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এক বার শুধু নীলাদ্রির নামটা ঘোষণা হয়ে যাক। তার পর পাগলা ভোট হবে। কিন্তু সে জায়গায় লকেট বা সুভাষদাকে দিলে (প্রার্থী করলে) কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’

সংশ্লিষ্ট অডিয়োর শুরুতে দলের সংগঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে বিধায়ককে। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে দল এখন বিদ্যার্থী পরিষদ লাইনে চলছে। তাই বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেদের সংগঠনের পদে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক দক্ষতা যাদের আছে, তাদের কিছু জানতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ অডিয়োবার্তার শেষে বক্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুধু মোদীর হাওয়ায় ভোট জেতা যাবে না। ভোটে জিততে হলে কর্মীদের চাই। সুকান্ত মজুমদার বাঁকুড়ার মাটিকে কতটা চেনেন? ক’বার তিনি বাঁকুড়ায় এসেছেন?’’

এই কথোপকথনের ক্লিপ ভাইরাল হতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। অডিয়োর সত্যতা জানতে একাধিক বার বিধায়ক নীলাদ্রিকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। অন্য দিকে, যাঁর বিরুদ্ধে এত মন্তব্য, সেই সুভাষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওই অডিয়ো শুনেছি। কিন্তু তার সত্যতা যাচাই করিনি। অডিয়োর সত্যতা যাচাই করতে হলে তো ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে হবে।’’ পর ক্ষণেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘যদি ওই অডিয়োর সত্যতা থেকে থাকে, তা হলে বলতে হবে ওই বিধায়ক বিজেপির এক জন উচ্ছৃঙ্খল বিধায়ক। আর এই রকমের কথা বলার অর্থ হল, বক্তা নিজের সম্পর্কে উচ্চাশা পোষণ করছেন। তিনি নিজের মনোনয়নের কথা লোকের কাছে বলছেন।’’ সুভাষের দাবি, এমন বক্তব্য আদতে তাঁর দলের নীতি এবং আদর্শের পরিপন্থী।

আরও পড়ুন
Advertisement