Anubrata Mondal

কেষ্টর বাড়িতে সংস্কার, ‘বাঘ’ বললেন ফিরহাদ

শুক্রবার ইডি-র মামলায় জামিন পেয়েছেন অনুব্রতও। শীঘ্রই জেলমুক্তি হবে তাঁর। সকন্যা বীরভূমের কেষ্টদা ফিরবেন, ধরে নিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রতের বাড়িতে এখন চলছে পরিষ্কারের কাজ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১৮
অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের খবর আসতেই,বোলপুরের নীচুপট্টি এলাকায় থাকা তাঁর বাড়িতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ শুরু হল। শনিবার।

অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের খবর আসতেই,বোলপুরের নীচুপট্টি এলাকায় থাকা তাঁর বাড়িতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ শুরু হল। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

বোলপুর: গরু পাচার মামলায় বাবা-মেয়ে, দু’জনেই ছিলেন তিহাড় জেলে। কিছুদিন আগেই জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা। শুক্রবার ইডি-র মামলায় জামিন পেয়েছেন অনুব্রতও। শীঘ্রই জেলমুক্তি হবে তাঁর। সকন্যা বীরভূমের কেষ্টদা ফিরবেন, ধরে নিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রতের বাড়িতে এখন চলছে পরিষ্কারের কাজ।

Advertisement

এরই মধ্যে শনিবার আরও এক বার অনুব্রতকে ‘বাঘ’ বলে সম্বোধন করেছেন পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘বাঘ বাঘই থাকে। বাঘ খাঁচার ভিতরে থাকলে শেয়াল, হায়নারা বাইরে থেকে হুঙ্কার দেয়। আর বাইরে বেরোলে তারা পালিয়ে যায়।’’ এর আগে গরুপাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরেও বীরভূমে এসে তাঁকে ‘বাঘ’ বলে সম্বোধন করেছিলেন ফিরহাদ।

এর পাল্টা এ দিন এক্স-হ্যান্ডলে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী লিখেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীর কেষ্টা, নাকি ববি মন্ত্রীর বীরভূমের বাঘ! খাঁচার বাঘ বেরিয়ে এলেই নাকি ভয়ে সব পালাবে? হালুম হুলুম, না চড়াম চড়াম? বীরভূমে থ্রেট সিন্ডিকেটের মাথা নাকি? বাঘের জায়গা হয় খাঁচা, নয় জঙ্গলে। সভ্য সমাজে নয়। অপরাধীদের পালানোর সময় এল কিন্তু। মনে রাখে যেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘আসলে ফিরহাদ হাকিম সাহেব অনুব্রতবাবু যাতে অভিমান না-করেন, তাই উৎসাহ দিতেই আবার বাঘ-টাগ বলছেন এবং উৎসাহ দিচ্ছেন পুরনো ফর্মে ফিরে চড়াম-চড়াম, গুড়-বাতাসা, বুথ দখল, ভোট লুট, মিথ্যা মামলা শুরু করতে। না হলে তো তৃণমুলের মুশকিল। তাই তাঁকে রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে উন্নয়ন দাঁড় করাতে বলছেন হাকিম সাহেব।’’

গরু পাচার মামলায় দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি অনুব্রত। একই অভিযোগে তাঁর মেয়ে সুকন্যাও প্রায় ১৭ মাস জেলবন্দি ছিলেন। দিল্লি হাই কোর্ট কয়েক দিন আগে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করে সুকন্যার। সিবিআইয়ের মামলা থেকে জামিন পান অনুব্রতও। সুকন্যার জামিনের খবর পাওয়ার পরে অনুব্রতও শীঘ্রই ফিরবেন জেলায় ধরে নিয়ে বোলপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভিতরে শুরু হয়েছিল রং করার কাজ। যে-সব মানুষ সমস্যা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে থাকেন, তাঁদের বসার জায়গা নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। লাগানো হচ্ছে পাখা ও আলো। কার্যালয়ে অনুব্রতের বসার ঘরও নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

শুক্রবার ইডি-র করা মামলাতেও জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। ফলে, তাঁর ঘরে ফেরা এখন সময়ের অপেক্ষা। শনিবার থেকেই অনুব্রতের বাড়ির বাগানে ঘাস কাটার মেশিন দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু হয়েছে। বাড়ির পাইপ লাইনের কাজও চলছে। অনুব্রত তিহাড়ে যাওয়ার সময় তাঁর বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ের দায়িত্ব যে অনুগামীদের দিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরাই দাঁড়িয়ে থেকে এই সমস্ত কাজ করাচ্ছেন।

অনুব্রতর ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডল বলেন, “দু'বছর দাদা ছিল না বলে পুজো একেবারেই ভাল কাটেনি আমাদের। আমরা চাই, পুজোর আগেই দাদা ফিরে আসুক। আবার একসঙ্গে হইহই করে পুজো কাটাব। দাদা ফিরে আসছেন ধরে নিয়ে বাড়ি পরিষ্কার চলছে।” তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ির মালিক বাড়িতে ফিরে আসবেন, তাই বাড়িতে কাজকর্ম তো হবেই। একই সঙ্গে দলীয় কার্যালয়েও পরিষ্কারের কাজ করা হচ্ছে।” শুক্রবার রাত থেকেই আনন্দে মেতেছেন বীরভূমের কেষ্টদার অনুগামীরা। এ দিনও সেই ছবি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

আরও পড়ুন
Advertisement