Teacher Transfer Order

উৎসশ্রী বন্ধ, তবুও শিক্ষক বদলির স্রোত

জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ৩০ জন ছাত্র পিছু এক জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু এই জেলার বাস্তব ছবি অন্য।

Advertisement
শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি। Sourced by the ABP

দু’বছরের বেশি বন্ধ ছিল শিক্ষকদের বদলির আবেদন জমার ‘উৎসশ্রী পোর্টাল’। সম্প্রতি শুধুমাত্র ‘মিউচুয়াল’ বদলির জন্য ওই পোর্টাল চালু হয়েছে। যদিও পোর্টাল বন্ধ থাকা অবস্থাতেই কোন জাদুবলে পুরুলিয়া জেলায় বহু প্রাথমিক শিক্ষক বদলি হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই বদলি করা হয়েছে। এর ফলে শহরাঞ্চলের কম পড়ুয়ার স্কুলে বেশি শিক্ষক রয়েছেন। আবার গ্রামাঞ্চলে ঠিক উল্টো ছবি।

Advertisement

জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ৩০ জন ছাত্র পিছু এক জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু এই জেলার বাস্তব ছবি অন্য। শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, শুধু রঘুনাথপুর শহরের স্কুলগুলিতে ছাত্র সংখ্যার অনুপাতে ৩২ জন শিক্ষক অতিরিক্ত আছেন। পুরুলিয়া শহর ও পাশের গ্রামাঞ্চলের ৭৪টি স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষকের সংখ্যা দেড়শোর বেশি।অন্যদিকে, গত এক বছর ধরে ঝালদা ৩ চক্রের ২২টি স্কুল চলছে এক জন শিক্ষক দিয়ে।

শিক্ষকদের একাংশের দাবি, বর্তমানে পুরুলিয়া জেলার গ্রামাঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাবে পড়াশোনা কার্যত লাটে উঠেছে। তাঁদের মতে, বহু পড়ুয়া থাকায় মিডডে মিলের দেখাশোনা-সহ অন্যান্য কাজ সারতেই সময় চলে যাচ্ছে। হাতে গোনা শিক্ষক থাকায় পড়ানোর সময়টুকু বের করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিরোধী শিক্ষক সংগঠন থেকে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের একাংশের দাবি, গত এক-দেড় বছর ধরে জেলায় শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে বেনিয়ম হয়েছে। তাঁদের দাবি, সাধারণ বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে কোনও শিক্ষককে বিশেষ কারণে বদলি নিতে গেলে তাঁকে আবেদন করতে হয় সংশ্লিষ্ট অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে। তিনি তাঁর মতামত (রেকমেন্ডেশন নোট) দিয়ে আবেদনটি পাঠাবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনও শিক্ষক বদলির আবেদন করলে প্রথমে দেখা হয়, তিনি চলে গেলে সেই স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত কী হবে।অর্থাৎ স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতি হবে কি না। তারপরেই মতামত জানিয়ে বিষয়টি পাঠানো হয় সংসদের কাছে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শিক্ষকদের বদলি হয়েছে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের অন্ধকারে রেখে। অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সংসদ থেকে বদলির নির্দেশ নিয়ে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে এসেছেন ‘রিলিজ অর্ডার’ নিতে। পরে সেই বদলির নির্দেশ ইমেলে সংসদ থেকে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের জানানো হয়েছে।

জেলার এক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কথায়, ‘‘দীর্ঘ চাকরি জীবনে এ ভাবে বদলির ঘটনা আগে দেখিনি। জানি না কোন জাদুবলে এমনটা হচ্ছে।’’

জাদুবল তাহলে কী? (চলবে)

Advertisement
আরও পড়ুন