Stone Merchant death

ব্যবসায়ী খুন, ২৪ ঘণ্টা পরেও ধরা পড়েনি কেউ

প্রথমে পুলিশ কুকুর এনে তদন্তের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃতের পরিজনেরা। পরে পুলিশের উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাসেই দেহ তুলতে সহযোগিতা করে পরিবার।

Advertisement
পাপাই বাগদি
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৬
মৃত সুজয় মণ্ডলের বাড়ির সামনে স্ত্রী পিউ-সহ পরিজনেরা। শনিবার মহম্মদবাজারের চন্দ্রপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

মৃত সুজয় মণ্ডলের বাড়ির সামনে স্ত্রী পিউ-সহ পরিজনেরা। শনিবার মহম্মদবাজারের চন্দ্রপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র papai bagdi

পাথর ব্যবসায়ী খুনের ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটেছে। এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। পুলিশ সূত্রে খবর, যাঁর নামে অভিযোগ হয়েছে, সেই পলাতক পাথর ব্যবসায়ীর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পরিবারের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ।

Advertisement

শুক্রবার সকালে মহম্মদবাজার থানার হিংলো পঞ্চায়েতের সারেন্ডা থেকে চন্দ্রপুর যাওয়ার রাস্তায় উদ্ধার হয় পাথর ব্যবসায়ী সুজয় মণ্ডলের গুলিবিদ্ধ দেহ। প্রথমে পুলিশ কুকুর এনে তদন্তের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দা ও মৃতের পরিজনেরা। পরে পুলিশের উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাসেই দেহ তুলতে সহযোগিতা করে পরিবার। কিন্তু তারপর থেকে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে সুজয়ের সঙ্গী, স্থানীয় আর এক পাথর ব্যবসায়ীর নামে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক সেই ব্যবসায়ী। মৃতের পরিবারের দাবি, অভিযুক্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়লেই কী কারণে সুজয়কে গুলি করে হত্যা করা হল তা প্রকাশ পাবে। সেই আশাতেই বসে রয়েছেন সুজয়ের পরিজনেরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই তদন্তে নেমেছে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত, সুজয়ের সঙ্গী ওই পাথর ব্যবসায়ীর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি আটক করা সুজয়ের এক পরিচিত ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রতিনিয়ত এলাকায় পুলিশি নজরদারিও চালানো হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই এমন ঘটনা ঘটেছে।

এর আগেও ওই এলাকায় দুই পাথর ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। সেখানেও ব্যবসা সংক্রান্ত বিবাদের ঘটনা সামনে এসেছিল। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, খুনের তদন্ত চলছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের মোবাইল পরীক্ষা ও আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর ব্যবসায়িক সূত্র ধরেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি মোবাইলের কল লিস্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

ব্যবসায়িক বিবাদের জেরেই যে এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে তা সন্দেহ করছেন মৃতের পরিজনেরাও। মৃত সুজয়ের বাবা শৈলেন মণ্ডল বলেন, “কী কারণে আমার ছেলেকে হত্যা করা হল তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে আমাদের ধারণা ব্যবসা সূত্রেই এই ঘটনা হতে পারে।’’ তিনি জানান, পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং অভিযুক্তের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আশাবাদী পুলিশ যেভাবে সহযোগিতা করছে, তাতে খুব শীঘ্রই এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে।”

এর আগে গত ২৮ মার্চ পাঁচামির তালবাঁধ এলাকার পাথর খাদান থেকে উদ্ধার হয়েছিল পাথর ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন খানের দেহ। এই এলাকা থেকেই ২১ অগস্ট পাথর ব্যবসায়ী তাপস দাসের দেহ উদ্ধার হয়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দু’দিন আগে ওই রাস্তা থেকেই উদ্ধার হয়েছিল বিজেপি কর্মী দিলীপ মাহারার মৃতদেহ।

একই এলাকায় বার বার এমন ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে এলাকায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘আগে যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, সব গুলিরই কিনারা করা হয়েছে। অপরাধীরাও ধরা পড়েছে। আশা করছি, এটিরও কিনারা হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন