ফাঁকা চেয়ারের সারি। —নিজস্ব চিত্র।
জাঁকজমক, আয়োজন, প্রস্তুতিতে খামতি ছিল না। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সময়ে শুরু না হওয়ায় গোড়াতেই যেন তাল কাটল পুরুলিয়া জেলা বইমেলার।
এ বছর ৩৯-এ পা দিয়েছে পুরুলিয়া বইমেলা। মঙ্গলবার মেলা উদ্বোধনের আগে ‘বইয়ের জন্য হাঁটুন’ শীর্ষক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। সেখানে জেলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন ছৌ শিল্পীরা। বেলা একটা নাগাদ জেলা গ্রন্থাগারের সামনে থেকে পড়ুয়া, অভিভাবক ও বইপ্রেমীদের ওই শোভাযাত্রা দুপুর দু’টোর কিছু পরে মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনে মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছয়। তবে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কোনও তোড়জোড়, প্রস্তুতি নেই। তাতে খানিকটা আশাহত হন সকলেই। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে অনেকেই চলে যান। এক বইপ্রেমী বলেন, “অন্য বছর পদযাত্রা শেষ হওয়ার পরই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। এ বার কেন দেরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”
দুপুর দু’টোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ। মঞ্চে উঠে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালিও বলেন, “অনেকটাই দেরি হল। পদযাত্রায় যোগদানকারী অনেকেই অপেক্ষা পরে বাড়ি চলে গিয়েছেন। আমরা অনুষ্ঠান সংক্ষেপে করার চেষ্টা করছি।”
শুধু দর্শকাসন নয়, প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান মঞ্চ ছাড়তেও দেখা গিয়েছে বহু বিশিষ্টজনকে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো যখন বক্তৃতা শুরু করেন, ততক্ষণে মঞ্চ অনেকটাই ফাঁকা হয়ে আসে। এ ছাড়াও এ বছর কেন পদযাত্রায় যোগদানকারীদের হাতে প্ল্যাকার্ড ছিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বইপ্রেমীরা। অনেকে বলেন, “প্রতি বছর সাহিত্যিক, দার্শনিকদের বইয়ের লাইন লেখা প্ল্যাকার্ড থাকে পদযাত্রায়। এ বার তা ছিল না।” মেলার উদ্বোধনে এ বছর পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের সম্পাদক স্বামী শিবপ্রদানন্দের অনুপস্থিতিও বইপ্রেমীদের নজর এড়ায়নি। তবে উদ্যোক্তারা জানান, অনুষ্ঠানে হাজির হতে না পারলেও মেলার উপদেষ্টা কমিটিতে রয়েছেন তিনি।
এ দিন ছিলেন জেলা রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য শান্তিরাম মাহাতো, জেলাশাসক রজত নন্দা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুদীপ পাল, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রানা বিশ্বাস, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী প্রমুখ। জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মার্শাল টুডু জানান, এ বছর মেলায় ১১২টি স্টল রয়েছে। মেলা চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। শুরুতে ছন্দ কাটলেও গোটা মেলা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে বলেই আশাবাদী উদ্যোক্তারা।