রবিচন্দ্রন অশ্বিন। —ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্রিসবেন টেস্টে ভারতের প্রথম একাদশে ছিলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সেই ম্যাচের পরই বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। দেশের হয়ে প্রায় ৩০০ ম্যাচ খেলা অশ্বিন বিদায়ী ম্যাচ পাননি। মাঠে তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদায় জানাতে পারেনি সতীর্থেরা। তা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই ৩৮ বছরের অফ স্পিনারের।
অশ্বিনের হঠাৎ অবসর বিস্মিত করেছে অনেককে। কপিল দেবের মতো অনেকে মেনে নিতে পারেননি তাঁর বর্ণহীন বিদায়কে। অবসরের পর প্রায় নিঃশব্দে দেশেও ফিরে এসেছেন। এ নিয়ে অনেকের আক্ষেপ থাকলেও অশ্বিন এ সব নিয়ে ভাবতে রাজি নন। এক সাক্ষাৎকারে সদ্য অবসর নেওয়া ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘আমার কাছে বর্ণাঢ্য বিদায়ের আলাদা অর্থ নেই। কারোর জন্য জমকালো বিদায় অনুষ্ঠান করার পক্ষেও নই। ব্যক্তিগত ভাবে আমার সায় নেই এমন কিছুতে। কারণ চাই না কেউ আমার জন্য চোখের জল ফেলুক। আমার কাছে গ্র্যান্ড সেন্ড অফ এক ধরনের বৃহৎ উদ্যাপন।’’ অশ্বিন আরও বলেছেন, ‘‘আমরা কেন কোনও এক জনের পিছনে ছুটব? বুঝতে পারি ভালবাসা থেকেই মানুষ কারোর পিছনে দৌড়য়। কিন্তু দৌড়ে কি লাভ? আমাদের উচিত সেই ভালবাসার মানুষের অর্জন থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। তার উত্তরাধিকার বহন করা প্রয়োজন। শুধু আমার অবসরকে উদ্যাপন করার জন্য কোনও ম্যাচ আয়োজন করা হলে সেটা ক্রিকেটের জন্য ক্ষতি।’’
বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির মাঝে অবসর নিয়ে অশ্বিন বলেছেন, ‘‘আমার কোনও আক্ষেপ নেই। এক দমই নেই। টেস্টে ৫৩৭টা উইকেট নিয়েও যদি খুশি হতে না পারি, তা হলে আর কিসে খুশি হব? যেটা নেই, সেটা নিয়ে আমার দুঃখ কেন হবে? কোনও কিছু মেনে নিতে পারার মধ্যেই বড় আনন্দ থাকে। আমার যেটা নেই সেটার জন্য ছোটার মানে হয় না। তার জন্য আক্ষেপ থাকা ঠিক নয়। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’’ অবসর নিয়ে তাঁর দর্শন, ‘‘এটা জীবনেরই একটা অংশ। জীবনের একটা অংশে দাঁড়ি পড়ে গেল। আমি তো ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে পারব। আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেল আছে। আমার কোচিং করাতেও ভাল লাগে। ক্রিকেট নিয়েই খুশি থাকতে পারব। ক্রিকেটের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ থাকবে আমার।’’
অনেকে মনে করছেন, অশ্বিনকে অবসর নিতে এক রকম বাধ্য করা হয়েছে। তাঁর বাবার মন্তব্য সেই মতবাদকে আরও শক্তিশালী করেছে। তা নিয়ে অশ্বিনের বক্তব্য, ‘‘কোনও আক্ষেপ নেই। আমার কোনও রাগও নেই। অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বা ঘোষণা করে কেঁদেও ফেলিনি। আমার অবসরের জন্য কেউ দায়ী নয়। কেউ হলেও আমার জানা নেই।’’