সাধারণের ভোগান্তির আশঙ্কা
Bangla Bandh

রাজনৈতিক লাভের অঙ্কেই কি আজ বন্‌ধ

মঙ্গলবার ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানে পুলিশের অত্যাচারের প্রতিবাদে বন্‌ধ ডাকা হলেও আর জি করের ঘটনাকে সামনে রেখে মানুষের সমর্থন পেতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৩৮

—ফাইল চিত্র।

ধর্মঘট সফল করতে আজ, বুধবার পুরুলিয়ায় রাস্তায় নামার কথা জানাল বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা বলেন, “বুধবার জেলার নানা এলাকায় মিছিল হবে। বন্‌ধ সফল করতে মিছিল থেকে আহ্বান জানানো হবে।” পাল্টা দলীয় কর্মীরাও রাস্তায় নেমে বন্‌ধের বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

মঙ্গলবার ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানে পুলিশের অত্যাচারের প্রতিবাদে বন্‌ধ ডাকা হলেও আর জি করের ঘটনাকে সামনে রেখে মানুষের সমর্থন পেতে চাইছে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া শহরে দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিবেক বলেন, “পুলিশ ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপরে আক্রমণ করেছে। তার প্রতিবাদে এ দিন যেমন রাজ্যের মানুষ সঙ্গে থেকেছেন, বন্‌ধেও সাড়া দেবেন বলে আশা করছি।” তাঁর সংযোজন, “আর জি করের ঘটনা রাজনৈতিক ঘটনা নয়। এক চিকিৎসক ছাত্রীর উপরে নৃশংস অত্যাচার হয়েছে। তৃণমূলের উচিত আমাদের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হওয়া।” এ দিন রেল অবরোধের কথাও জানিয়েছে বিজেপি।

তবে বিজেপির ধর্মঘটকে পুরোপুরি রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসাবে দেখছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, “আর জি করের ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ আমরাও জানিয়েছি। আমরাও চাই, জড়িতরা দৃষ্টান্তমূলক সাজা পাক। কিন্তু এ দিন যে ভাবে ছাত্র সমাজের নামে বিজেপি অশান্তি তৈরি করেছে, তা মানুষ দেখেছে। তার পরে তারা বন্‌ধও ডেকেছে।” তাঁর সংযোজন, “রাজ্যের মানুষ এখন আর বন্‌ধ চান না। তা ছাড়া, এখন চাষের মরসুম চলছে। একটি কাজের দিন যাতে নষ্ট না করা হয়, তার অনুরোধ আমরা জেলাবাসীর কাছে রাখছি।”

আজ, বুধবার কলকাতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সমাবেশ রয়েছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি কিরীটী আচার্যের দাবি, “সমাবেশকে বানচাল করতে এই বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। তবে তা সফল হবে না। জেলা থেকে সকলে রাতের মধ্যেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।”

এ দিকে, হঠাৎ করে বন্‌ধের ঘোষণায় ভোগান্তির আশঙ্কা বাড়ছে। আদ্রার এক বাসিন্দা বলেন, “চিকিৎসার প্রয়োজনে বুধবারই দক্ষিণ ভারত যেতে হবে। ট্রেনের আসন সংরক্ষণ হয়ে গিয়েছে। বন্‌ধে রেল অবরোধ হলে মুশকিলে পড়ব।” তবে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমারের দাবি, বুধবার জেলায় পরিবহণ স্বাভাবিকই থাকবে।

আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বাঁকুড়ায় নিয়মিত প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে। তার প্রভাব বন্‌ধেও পড়বে বলে আশাবাদী বিজেপির একাংশ। দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “আমরা নিশ্চিত, সাধারণ মানুষ বন্‌ধ পালন করে তৃণমূল সরকারকে যোগ্য জবাব দেবে।” এ দিকে, বন্‌ধ রুখতে তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূল শিবিরে। সূত্রের খবর, দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে সাধারণ মানুষ যাতে বন্‌ধে শামিল না হন, তা নিয়ে প্রচারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। তবে কর্মীরা কোথাও যাতে ঝামেলায় জড়িয়ে না পড়েন, তা নিয়েও সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, কলকাতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে সদস্য-সমর্থকদের নিয়ে রাতের মধ্যে জেলা থেকে বাস রওনা দেবে বলে জানিয়েছে সংগঠন। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ছাত্রদের আন্দোলনকে সামনে রেখে বিজেপি যে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে, নবান্ন অভিযানেই তা টের পেয়েছেন মানুষ। তাই কেউ বন্‌ধকে সমর্থন করবেন না।”

আরও পড়ুন
Advertisement