21 July Rally

জয়প্রকাশের বৈঠকে অরূপ নেই, চর্চায় দ্বন্দ্ব

মিছিলেই দু’পক্ষের কর্মীদের মধ্যে একপ্রস্থ হাতাহাতি শুরু হয়। তবে পুলিশের তৎপরতায় তখনকার মতো ঝামেলা মেটে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ওন্দা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার ওন্দায় বৈঠক করলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। অথচ সেই বৈঠকে দেখা গেল না ওন্দার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অরূপ খাঁ ও তৃণমূল পরিচালিত ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা অরূপের ভাইপো অভিরূপ খাঁকে। ঘটনাটি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে অরূপ ও অভিরূপ দু’জনেরই অভিযোগ, জেলা নেতৃত্ব তাঁদের ওই বৈঠকে ডাকেননি। যদিও জেলা নেতৃত্ব সে অস্বীকার অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

কিছু দিন আগেই ওন্দায় একুশে জুলাইয়ের প্রচারে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উত্তম বিট ও প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ খাঁয়ের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। একুশে জুলাইয়ের প্রচারে দু’পক্ষই একই দিনে প্রায় একই সময়ে দু’টি পৃথক মিছিলের আয়োজন করেছিল। দুই মিছিল মুখোমুখি হতেই অরূপের মিছিল থেকে উত্তমকে ‘বালি মাফিয়া’ বলে কটাক্ষ করে স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, উত্তমের মিছিল থেকে পাল্টা অরূপকে ‘বহিরাগত’ বলে স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

মিছিলেই দু’পক্ষের কর্মীদের মধ্যে একপ্রস্থ হাতাহাতি শুরু হয়। তবে পুলিশের তৎপরতায় তখনকার মতো ঝামেলা মেটে। কিন্তু মিছিল শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরেই ওন্দা ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে হামলা হয়। অরূপ লোক পাঠিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হামলা করিয়েছেন বলে উত্তম অভিযোগ তোলেন। এক মহিলা কর্মীকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। অরূপ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তমই পরিকল্পনা করে হামলা করিয়েছেন বলে পাল্টা দোষারোপ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে।

পুরো ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে দল। কড়া পদক্ষেপের কথাও জানানো হয়। এ দিনের বৈঠকে অরূপ যোগ না দেওয়ায়, দল তাঁর বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ করেছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা হলেও অরূপ ২০১১ ও ২০১৬ সালে ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। তবে ২০২১ সালে অরূপ পরাজিত হলেও ওন্দার রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব থেকে যায়। ভাইপো অভিরূপকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি করার পিছনে অরূপের ‘হাত’ রয়েছে বলে দলের একাংশের দাবি।

তবে প্রথম থেকেই ওন্দার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ অরূপকে মেনে নিতে পারেননি, ইদানীং তা নিয়েই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়েছে। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, “তৃণমূল অনুশাসনের সঙ্গে আপস করে না। দলীয় শৃঙ্খলা কেউ নষ্ট করলে দল পদক্ষেপ করবে।”

এ দিনের বৈঠকে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও অরূপ না থাকায় চর্চা শুরু হয়েছে। ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েও অভিরূপ কেন বৈঠকে গেলেন না প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। অরূপ বলেন, “আমাকে বৈঠকের কথা কেউ জানাননি। জানালে নিশ্চয় যেতাম। আমি দলের সৈনিকের মতো নিজের কাজ করে চলেছি।” অভিরূপ বলেন, “এ দিন বৈঠক ছিল বলে দল আমাকে জানায়নি। জানালে কেন যাব না? এই দলই তো আমার সব কিছু।”

না জানানোর অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের ওন্দা ব্লক ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। ব্লক সভাপতি উত্তম বলেন, “এটা জেলার বৈঠক। আমি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বৈঠকের কথা জানিয়েছিলাম। সেখানে সবাই দেখেছেন। তারপরেও কেউ না এলে সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “সবাইকেই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে। তারপরেও কেউ যদি বলেন, ‘জানানো হয়নি’ তাহলে মিথ্যা কথা বলছেন।”

আরও পড়ুন
Advertisement