Half Dam Repaired

বাঁধ আংশিক সারাই, উদ্বেগে রতনপুরবাসী

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় ও হিংলো মধ্যবর্তী এলাকায় বেশ কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
দয়াল সেনগুপ্ত 
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০৯:০২
নদী ভাঙন রুখতে খয়রাশোলের রতনপুর ঘেঁষা অজয় নদে বাঁধ সংস্কার হয়েছে। তবে তা আংশিক।

নদী ভাঙন রুখতে খয়রাশোলের রতনপুর ঘেঁষা অজয় নদে বাঁধ সংস্কার হয়েছে। তবে তা আংশিক। নিজস্ব চিত্র।

কথা ছিল নদী ভাঙন রুখতে ৫০০ মিটার বাঁধ সংস্কারের কাজ হবে। অজয় নদ ঘেঁষা খয়রাশোলের রতনপুর এলাকায় সেই বাঁধ সংস্কারের কাজ হয়েছে মাত্র ২২৫ মিটার। শনিবার সে কাজ শেষ হয়েছে। তবে এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, বর্ষার আগে তা বিশেষ কাজে আসবে না।

Advertisement

খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার রসিদপুর সংসদে বসবাস অজয় নদ ঘেঁষা রতনপুর শম্ভুনাথ কলোনির বাসিন্দাদের। বর্ষায় বাসিন্দাদের চিন্তার প্রধান কারণ নদের ভাঙন। এলাকাবাসীর দাবি, কয়েক বছর ধরে অজয়ের জলে নদের ধার বরাবর অন্তত ১৫০ ফুট কৃষি জমি তলিয়ে গিয়েছে। গত বছর অক্টোবরে টানা বৃষ্টি ঝাড়খণ্ডের বাঁধ থেকে জল ছাড়ায় একই সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের। বাঁধ সংস্কারের কাজ হবে বলে সেচ দফতর আশ্বাস দেওয়ার পর আশাবাদী হন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু আংশিক কাজ হওয়ায় লাভ কিছু হবে না বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজয় ও হিংলো মধ্যবর্তী এলাকায় বেশ কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। অজয়ের ধার ঘেঁষা রতনপুর কলোনি সেগুলির অন্যতম। সেখানে ৭০টি পরিবারের বাস। মূলত কৃষিজীবী তাঁরা। অজয় ঘেঁষা জমিতে কয়েক দশক ধরে ধান, সর্ষে, বাদাম ও নানাবিধ আনাজ চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। কিন্তু সেই জমিই তিলে তিলে গিলে ফেলছে নদ।

অজয়ের ভাঙনের সেই সমস্যা এড়াতেই ওই এলাকার ৫০০ মিটার নদী বাঁধ বোল্ডার দিয়ে বাঁধানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেচ দফতর। বরাদ্দ হয়েছিল ৮৮ লক্ষ টাকা। কিন্তু চলতি বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু করে যে অংশে বাঁধ সংস্কারের কাজ হয়েছে, সেখানে কোনও বসতি নেই। কেবল দুবরাজপুর পুরসভার জলপ্রকল্প রয়েছে। রতনপুরের বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল, নরেন সরকাররা বলছেন, ‘‘বাঁধ সংস্কারের ফলে নিরাপদ হয়েছে পুরসভার জলপ্রকল্পের পাম্প হাউসটুকু। নদের ধার বরাবর আরও ২৫০-৩০০ মিটার বাঁধ সংস্কার হলে আমাদের কৃষি জমি বেঁচে যেত।’’

কৃষিজমি যে অংশ ছিল সেখানে কোনও কাজ হয়নি বলে ক্ষোভ হরেন সরকার, নৃপেন শিকদারের মতো বাসিন্দাদেরও। তাঁরা বলছেন, ‘‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী এ বার ভাল বর্ষা হবে। ঝাড়খণ্ডের শিকাটিয়া ব্যারাজ থেকে জল ছাড়লে আবারও নদীগর্ভে কৃষিজমি তলিয়ে যাওয়ার সমস্যায় পড়তে হবে। স্থানীয় কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত ও সেচ দফতরকে আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা লিখিত ভাবে জানাব।’’

সেচ দফতর এই কাজের বিষয়ে পঞ্চায়েতকে জানায়নি বলে দাবি কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেয়া দাসের। তিনি বলছেন, ‘‘শুনেছি রসিদপুর সংসদে নদীবাঁধ সংস্কারের কাজ হয়েছে। কিন্তু কতটা কাজ, কত টাকার কাজ, কবে শুরু কবে শেষ তার কিছুই সেচ দফতর পঞ্চায়েতকে জানায়নি। সেটা হলে রতনপুরের বাসিন্দাদের স্বার্থে কিছু বলতে পারতাম।’’

সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (বোলপুর) শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, একসঙ্গে ৫০০ মিটার নদী বাঁধ বোল্ডার দিয়ে বাঁধানোর টাকা পাওয়া যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘ধাপে ধাপে টাকা মেলে। দুবরাজপুর পুর-এলাকার জলপ্রকল্প যেহেতু সরকারি সম্পত্তি, প্রথম ধাপের টাকা পাওয়ার পর সেই অংশের কাজ আগে হয়েছে।’’ সেচ দফতরের ওই কর্তা বলছেন, ‘‘আশা করি দ্বিতীয় ধাপের অনুমোদন জুলাইয়ে পাব। তবে সে কাজ শুরু করতে ডিসেম্বর হয়ে যাবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন