Buddhadeb Bhattacharjee Death

মাওবাদী উপদ্রুত এলাকাতেও পৌঁছন বুদ্ধ

২০০৫ সালের শেষের দিকে বান্দোয়ানের কুইলাপাল মাঠের সভা থেকে মাওবাদীদের হুঙ্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব। রাজনৈতিক ভাবে মাওবাদীদের বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিলেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ০৪:০৮
২০০৯ সালে পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজ মাঠে প্রকাশ্য জনসভায়

২০০৯ সালে পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজ মাঠে প্রকাশ্য জনসভায় নিজস্ব চিত্র।

২০০৩ সালের অক্টোবর। বান্দোয়ানের কাঁটাগোড়ার জঙ্গলে মেঠো রাস্তায় জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর (পরে সিপিআই-মাওবাদী) পেতে রাখা ল্যান্ডমাইনে উড়ে যায় পুলিশের গাড়ি। মারা যান বান্দোয়ান থানার তৎকালীন ওসি নীলমাধব দাস। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি। বান্দোয়ানের সীমানা ঘেঁষা বেলপাহাড়ির জঙ্গলে জনযুদ্ধের মাইন ফেটে মৃত্যু গাড়ির চালক এবং সাত পুলিশ কর্মীর। রাতে বাড়িতে ঢুকেও একের পর এক সিপিএম নেতাকে খুন করেছে জঙ্গিরা।

Advertisement

জনযুদ্ধ যে ততদিনে জঙ্গলমহলের গ্রামগুলিতে জনভিত্তি বেশ কিছুটা পোক্ত করে ফেলেছে, সেই গোয়েন্দা রিপোর্ট পৌঁছে গিয়েছিল মহাকরণে, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে। বুঝতে পেরেছিলেন, পায়ের তলার মাটি শক্ত রাখতে হলে তাঁকে পৌঁছতেই হবে সেই জঙ্গলমহলে।

২০০৫ সালের শেষের দিকে বান্দোয়ানের কুইলাপাল মাঠের সভা থেকে মাওবাদীদের হুঙ্কার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব। রাজনৈতিক ভাবে মাওবাদীদের বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিলেন। তার বেশ কিছু দিন পরেই বান্দোয়ানের ভোমরাগোড়ায় মাওবাদীরা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি রবীন্দ্রনাথ কর ও তাঁর স্ত্রী আনন্দময়ী করকে গুলি করে পুড়িয়ে মারে। সিপিএম নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, বান্দোয়ানেই সিপিএমের ন’জনকে খুন করে মাওবাদীরা। বান্দোয়ানের লেদাম গ্রামে হানা দিয়ে সিপিএম নেতা নন্দ বেসরাকে খুন করে তাঁর ভাইঝি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অনিমা বেসরাকে তুলে নিয়ে যায় মাওবাদীরা। বান্দোয়ানের সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক সুশান্ত বেসরা বলেন, ‘‘অনিমা জীবিত না মৃত, তা বিধানসভায় জানতে চেয়েছিলাম। উত্তর পাইনি। তবে বুদ্ধবাবু এখানে এসে মাওবাদীদের রাজনৈতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করার কথা বার বার বলে গিয়েছেন। পরে এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে যে প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলা হয়েছিল, তার অনুপ্রেরণা ছিলেন তিনিই।’’

২০০৭ সালের নভেম্বরে অযোধ্যা পাহাড়তলির ঘাটবেড়ার সিপিএম কর্মী সুফল মান্ডি খুন হন। বলরামপুরে দলের তৎকালীন জ়োনাল সম্পাদক গোবর্ধন মাঝি বলেন, ‘‘সেই শুরু। ২০১০ পর্যন্ত আমরা ২৫ জন সতীর্থকে হারাই। পালাবদলের আগে-পরে তৃণমূলেরও চার জন খুন হন।’’ তবুও একাধিকবার বলরামপুরে দাঁড়িয়ে মাওবাদীদের চ্যালেঞ্জ ছোড়েন বু্দ্ধবাবু।’’ ২০০৬ সালে অযোধ্যা পাহাড়ে পুরুলিয়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জল ধরার কাজের সূচনায় এবং ২০০৮ সালে প্রকল্পের উদ্বোধনে এসেছিলেন বুদ্ধদেব। তখন সেখানে মাওবাদীরা সক্রিয়।

আরও পড়ুন
Advertisement