BJP

মমতাকে ফের কুকথা, বেলাগাম কালোসোনা

আর জি কর নিয়ে শুক্রবার রাজ্যব্যাপী থানা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল বিজেপির।এ দিন সিউড়ি থানার সামনের ব্যারিকেড ভেঙে, ভিতরে ঢুকে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৬
সিউড়ি থানার সামনে বিজেপি সমর্থকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

সিউড়ি থানার সামনে বিজেপি সমর্থকদের বিক্ষোভ। শুক্রবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কু-কথা বলে বিতর্কে জড়ালেন বীরভূমের বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল।

Advertisement

আর জি কর নিয়ে শুক্রবার রাজ্যব্যাপী থানা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল বিজেপির।এ দিন সিউড়ি থানার সামনের ব্যারিকেড ভেঙে, ভিতরে ঢুকে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি করেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। সেখানেই থানার বাইরে অবস্থান-মঞ্চে বক্তৃতা করতে উঠে কালোসোনা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া উচিত! তবেই বাংলা শান্ত হবে।’’ বাংলাদেশের নাম না-করে কালোসোনা বলেন, ‘‘২৭ তারিখ নবান্ন অভিযান, তার পরেই দেখবেন, অন্যান্য দেশে যেমন নেত্রীকে পালিয়ে যেতে হচ্ছে, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীকে পালাতে হবে।’’

এর আগেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য ও কু-কথা বলার অভিযোগ রয়েছে কালোসোনার বিরুদ্ধে। তাঁকে দল থেকে এর আগে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। এ দিনের মন্তব্য প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের কাছে কালোসোনার দাবি, ‘‘উনিই নাটের গুরু! তাই ওঁকে না সরালে বাংলা বাঁচবে না। উনি এতই খারাপ করেছেন যে, উনি পালিয়ে গেলেও কেউ ওঁকে আশ্রয় দেবে না।’’ প্রতিক্রিয়ায় সিউড়ির বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘যে দলের মঞ্চে দাঁড়িয়ে উনি এই কথাগুলি বলছেন, সেই দলেই ওঁর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। আর জি করের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যে অবস্থান নিয়েছেন, তা অকল্পনীয়। তার পরেও এই ধরনের মন্তব্য করার অর্থ সকলের কাছেই পরিষ্কার।’’ বিকাশের সংযোজন, ‘‘লোকসভা ভোটে মানুষ একবার ওদের জবাব দিয়েছে। আগামী বিধানসভা ভোটে আবারও জবাব দেবে। এ ভাবে কদর্য রাজনীতি করলে, বিজেপি যেটুকু আছে, সেটাও মুছে যাবে!’’

বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার নেতৃত্বে এ দিন সিউড়ি থানা ঘেরাও করে বিজেপি। এই প্রতিবাদ কর্মসূচির পরে পুলিশ ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে বিজেপি কর্মীদের ফাঁসাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ধ্রুব৷ তবে, ব্যারিকেড ভেঙে থানায় ঢুকে প্রতিবাদের ঘটনায় পুলিশ এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করেনি বলেই জানা গিয়েছে।

এ দিন সকাল থেকেই সিউড়ির চৈতালি মোড়ে অস্থায়ী অবস্থান মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভে শামিল হন জেলা বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। ধ্রব সাহা ছাড়াও ছিলেন
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য, জেলা নেতা শ্যামসুন্দর গড়াই, বাবন দাস-সহ অনেকে। বিকেল ৪টে নাগাদ বৃষ্টি মাথায় করেই থানা ঘেরাও
করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। নিরাপত্তার খাতিরে আগে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় থানায় ঢোকার রাস্তা৷ কিন্তু, বিজেপির মিছিল থানার সামনে এসেই ব্যারিকেড ভাঙতে শুরু করে৷ সমস্ত ব্যারিকেড সরিয়ে ফেলার পরে দলের কর্মীরা থানার দরজা খুলে ভিতরে ঢোকেন এবং সেখানেই আগুন জ্বালিয়ে আর জি কর-কাণ্ডে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের ভূমিকার প্রতিবাদে স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে ধ্রুব দাবি করেন, “বৃহস্পতিবার যে-ভাবে রাজ্য সরকারের অনুগত পুলিশ একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কণ্ঠরোধ করার জন্য শুভেন্দু অধিকারী, শমিক ভট্টাচার্যদের গ্রেফতার করেছে, তার প্রতিবাদ জানাতেই এই বিক্ষোভ। আমরা এই নৈরাজ্য মেনে নেব না।”

বিজেপির এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ রকম একটি মর্মান্তিক ঘটনাকে অস্ত্র করে রাজনীতির তাস খেলতে চাইছে বিরোধীরা। দু'দিন আগে যারা ভোটে হেরে মুখ লুকিয়ে ছিল, তারাই এখন নতুন করে আবার ভেসে উঠতে চাইছে।’’ মলয়ের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছেন দোষীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এর পরেও বিরোধীরা আন্দোলন চালিয়ে সরকার বদলের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু মানুষ তা হতে দেবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement